বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে (জিএইচআই) বাংলাদেশের স্কোরের বেশ উন্নতি হলেও সামগ্রিকভাবে তালিকায় গত বছরের চেয়ে এক ধাপ পিছিয়েছে। এ তালিকায় এবার বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে যৌথভাবে ৭৬তম স্থানে রয়েছে। এই সূচকে পাশের দেশ ভারত পিছিয়েছে ৭ ধাপ। এতে ১১৬ দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১০১তম। গত বছর দেশটি ৯৪তম অবস্থানে ছিল।
ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ ২০১২ সালে ২৮.৬ স্কোর নিয়ে হলুদ ক্যাটাগরিতে ছিল। জিএইচআই-এর সূচকে এই হলুদ রংয়ের ক্যাটাগরি ‘সিরিয়াস’ বা বিপদজনক হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশ ২০০০ সাল থেকে এই ‘সিরিয়াস’ ক্যাটাগরিতে থাকলেও দেশটি এখন আকাশি রংয়ের ‘মডারেট’ ক্যাটাগরিতে জায়গা করে নিয়েছে। ২০০০ সালের চেয়ে স্কোরে ১৪.৯ পয়েন্ট এগিয়েছে বাংলাদেশ।
এই তালিকায় স্কোরের দিক থেকে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দেশগুলোকে সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বা লাল তালিকায় রাখা হয়। আর তালিকায় ভালো অবস্থায় থাকা দেশগুলো ঝুঁকির দিক থেকে কম পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে সবুজ রংয়ের ক্যাটাগরিতে।
বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর থেকেই এগোচ্ছে। ২০১৯ সালে একবারে ১৩ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ ৮৮তম স্থানে উঠে আসে। পরের বছর এ অবস্থান হয় ৭৫তম স্থানে। ২০২০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২০.৪, এবার সেটির আরও উন্নতি হয়ে স্কোর পয়েন্ট হয়েছে ১৯.১। তবে এবার স্কোরের দিক থেকে বাংলাদেশের উন্নতি হলেও তালিকায় নতুন করে ৯টি দেশ যুক্ত হওয়ায় সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ নেমে হয়েছে ৭৬।
২০২০ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক তৈরি হয়েছিল ১০৭টি দেশকে নিয়ে। আর চলতি বছর ১১৬ দেশ নিয়ে তৈরি হয়েছে এ সূচক।
তালিকায় গত বছর ভারতের স্থান ছিল ৯৪তম, এবার দেশটির অবস্থান ১০১তম। তালিকায় ক্যাটাগরি বিবেচনায় দেশটি আছে হলুদ রংয়ের ‘সিরিয়াস’ বা বিপদজনক অংশে।
ভারতের অবস্থান বাংলাদেশ, নেপাল, মিয়ানমার এমনকি পাকিস্তানেরও নিচে।
সূচকে মিয়ানমার রয়েছে ৭১তম স্থানে, আর পাকিস্তানের অবস্থান ৯২তম।
২০০০ সালে ভারতের সূচক পয়েন্ট ছিল ৩৮ দশমিক ৮। তারপর ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তা ২৭ দশমিক ৫ থেকে ২৮ দশমিক ৮ পয়েন্টের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
আইরিশ সাহায্য সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং জার্মান সংগঠন ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ-এর যৌথভাবে এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।
চীন, ব্রাজিল এবং কুয়েতসহ ১৮টি দেশ পাঁচটির কম জিএইচআই স্কোর নিয়ে ইনডেক্সের শীর্ষস্থানে রয়েছে।
বিশ্ব ক্ষুধার সূচক তৈরি করা হয় মূলত চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যার মধ্যে অপুষ্টি একটি অন্যতম নির্ধারক মাপকাঠি।
পাশাপাশি যে দিকগুলো রয়েছে, তা হলো পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতার তুলনায় কম ওজন, উচ্চতা কী রকম ও শিশু মৃত্যুর হার।
জিএইচআই অনুমান বলছে, সারা বিশ্ব এবং বিশেষ করে ৪৭টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা কমিয়ে আনতে ব্যর্থ হবে। খাদ্য সুরক্ষা একাধিক ক্ষেত্র ঝুঁকির মুখে রয়েছে।