রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ ৪৫ মাসেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অথচ প্রকল্পটি শেষের সময় ধরা হয়েছিল ১৮ মাস বা দেড় বছর। দীর্ঘদিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে পথচারীসহ সড়কের পাশের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছে, সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য প্রশস্তকরণের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সড়কে থাকা খুঁটিগুলো সরিয়ে না নিলে বর্ধিত সময়ের মধ্যেও কাজ বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হবে না।
সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৮ সালে শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে চরবাগমারা পর্যন্ত সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। প্রায় ৬০ কোটি টাকায় চার কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওহেদ কনস্ট্রাকশন। ১৮ মাসের প্রকল্পটির মেয়াদ পরে কয়েক দফায় বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
প্রায় চার বছরে শুধু শ্রীপুর থেকে বড়পুল পর্যন্ত দুই কিলোমিটারের কাজ শেষের দিকে। বড়পুল থেকে চরবাগমারা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের মাত্র একপাশের কাজ শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ জটিলতার কারণে অন্যপাশের সড়ক উন্নয়নের কাজ হয়নি।
এ ছাড়া ড্রেন নির্মাণের কাজও চলছে ধীরগতিতে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সড়কে চলাচলকারী যানবাহনচালক ও সাধারণ মানুষ।
এ সড়কে চলাচলকারী বাসচালক আব্দুল সাত্তার জানান, প্রায় চার বছর ধরে চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ। এখনও শেষ দুই কিলোমিটারের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ সড়কে চলতে ধুলাবালির কারণে নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়।
অটোরিকশাচালক সম্রাট জানান, চারলেনের রাস্তার এক পাশের কাজ হয়েছে। অন্য পাশের কাজ না হওয়ায় ধুলাবালির পাশাপাশি খালাখন্দের কারণে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।
বড়পুল এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর বলেন, ‘কি যে ভোগান্তিতে আছি, সেটা বলে বোঝানো যাবে না। পুরা দোকানে ধুলাবালি। খরিদ্দার আসতে চায় না ধুলার কারণে। বাধ্য হয়েই ধুলাবালির মধ্যে ব্যবসা পরিচালনা করতে হচ্ছে।’ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওহেদ কনস্ট্রাকশনের পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন জানান, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছের কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটছে। তা ছাড়া করোনার কারণে বেধ কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল।
তবে আগামী দুই মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে দাবি করেন তিনি।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান জানান, সড়কটির চার কিলোমিটারের মধ্যে দুই কিলোমিটারের কাজ করোনার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি। এ ছাড়া রাস্তার ওপর ৯১টি বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণে ধীরগতির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
তবে জুনের আগেই ফোর লেনের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।