বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির ঘাটতি রাজবাড়ী পৌরসভায় বসবাসকারীদের চরমে ভোগান্তিতে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে পানির লাইন পরিষ্কার না করায় বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নাগরিকরা।
পৌরবাসী জানায়, দীর্ঘদিন সরবরাহ লাইন পরিষ্কার না করায় পানি খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে নিজেরাই মোটর বসিয়ে পানি সংগ্রহ করছেন।
পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫০ বছর আগে পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। সড়ক প্রশস্ত করায় অধিকাংশ পাইপ এখন মাঝ বরাবর পড়েছে। এ কারণে লাইনগুলো আর পরিষ্কার বা সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।
পৌরসভা থেকে জানা যায়, ৬৫ কিলোমিটারের পাইপলাইন দিয়ে প্রতিদিন ২ হাজার গ্রাহককে ৬ লাখ গ্যালন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া মিটার না থাকার কারণে কিছু পানি অপচয়ও হয়।
খালি রয়েছে পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীর পদটিও। সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জুয়েলকে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শহরের সজ্জনকান্দার বাসিন্দা জাইকায় কর্মরত সালেহীন পাপুনের দাবি, এক সময় সারা দেশে রাজবাড়ীর পানিকে মডেল হিসেবে গণ্য করা হতো। এত সুপেয় পানি সারা দেশে কোথাও পাওয়া যেত না। এখন এই পানি দুর্গন্ধের কারণে একেবারে পান করার অযোগ্য।
হাসপাতাল রোডের নাসরিন আক্তার নিজেই একটা খাবারের দোকানে পানি সরবরাহ করেন। তিনি বলেন, ‘সাপ্লাই পানিতে ময়লা। এই পানি খাওয়া যায় না। শুধু থালাবাসন ধুই। আমি নিজে যখন এই পানি খাই না তখন কাস্টমারকে দিব কেমন করে। অথচ মাস শেষে ঠিকই পানির বিল দিতে হয়।’
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে জানান, পৌরসভার পানি বণ্টনে নানা সমস্যা রয়েছে। ৫০ বছর আগে পাইপলাইন স্থাপন করা হলেও সেই লাইনগুলো আর সংস্কার করার সুযোগ নেই। সব পাইপ রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার কারণে মাঝখানে পড়ে গেছে।
দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় পাইপগুলোতে মরিচা ধরেছে। শ্যাওলা জমে বেশির ভাগ জায়গা লিকেজ হয়ে বাইরের ময়লা ভেতরে ঢুকে পানি নষ্ট করে দিচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পৌরসভায় পানি পরীক্ষা করার কিট না থাকায় পানিতে আর্সেনিক কিংবা আয়রন আছে কি না তাও পরীক্ষার সুযোগ নেই।
রাজবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নির্মল কুমার চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাইপগুলো অনেক পুরোনো। দীর্ঘ সময়ে রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার কারণে পাইপের অবস্থান যেখানেই রয়েছে সেটা মেরামত করা সম্ভব নয়। আমরা নতুন পাইপলাইন বসানোর চিন্তা করছি।’