ষষ্ঠী, সপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী পেরিয়ে দুর্গাপূজার আজ বিজয়া দশমী। অর্থাৎ পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব সমাপ্তির দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এ উৎসবের।
বিজয়া দশমীতে ভক্তদের কাঁদিয়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। এ জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে বাজছে বিদায়ের সুর।
বিদায়ের কষ্ট ভুলে থাকতে এবং দেবীকে হাসিমুখে বিদায় জানানোর জন্য দিনটিতে ভক্তরা সাধারণত সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন।
রাজধানীর প্রধান মন্দির ঢাকেশ্বরীতে সকাল ৯টা ১১ মিনিটের মধ্যে দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেয়া হবে। দশমী হবে বেলা ১১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত ধর্মদাশ চট্টোপাধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহিষাসুরের সঙ্গে নয় দিন নয় রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এ জন্যই বিজয়া দশমী। যুদ্ধ জয়ের আনন্দে সামিল হতে এই দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়।’
এদিকে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পূজার আগে থেকে মণ্ডপগুলো ঘিরে আমাদের কঠোর নিরাপত্তা ছিল। বিসর্জনেও আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার থাকবে। যেখানে যে ধরনের নিরাপত্তা দরকার, সেই প্রস্তুতিই আমাদের রয়েছে।’
পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে এসেছেন ঘোড়ায় চেপে। পুরাণ অনুযায়ী, দুর্গা ঘোড়ার পিঠে চড়ে এলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, ঝড়, রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে।
বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়ছেন দোলায় চড়ে। দোলায় গমনেও বাড়বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্বিপাক।
পুরাণ অনুযায়ী, ব্রহ্মার বর পেয়ে মানুষ ও দেবতাদের অজেয় হয়ে উঠেছিলেন মহিষাসুর। ফলে তাকে পরাজিত করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর যে মহামায়ারূপী নারী শক্তি তৈরি করেন, তিনিই দেবী দুর্গা। দশভূজা দুর্গা টানা নয় দিন যুদ্ধ করে মহিষাসুরকে বধ করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ১১৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর সারা দেশে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ২১৩টি।
ঢাকা মহানগরে এবার পূজা হয়েছে ২৩৭টি মণ্ডপে। এর মধ্যে সূত্রাপুর থানায় সবচেয়ে বেশি ২৫টি, কোতোয়ালি থানায় ২১টি, ওয়ারীতে ১৬টি, গেণ্ডারিয়ায় ১৪টি, হাজারীবাগে ১৩টি, তুরাগে ১২টি, বাড্ডায় ১০টি, বনানীতে নয়টি, মোহাম্মদপুরে নয়টি, দারুসসালাম ও গাবতলীতে আটটি করে, ডেমরায় আটটি এবং তেজগাঁও থানায় ছয়টি মণ্ডপ রয়েছে।