যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড ও ফ্রান্স সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ৩১ অক্টোবর এ সফর শুরু হচ্ছে।
রোমানিয়া ও সার্বিয়া সফর থেকে ফিরে পররাষ্ট্র ভবনে বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি জানান, গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিস সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ আয়োজিত জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে (কপ-২৬) যোগ দিতে ১ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগোতে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য দেবেন তিনি।
পরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য লন্ডনে যাবেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকে তিনি সরাসরি প্যারিসে যাবেন ইউনেসকো প্রবর্তিত ‘বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ পুরস্কার’ দিতে।
মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কপ-২৬ শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। তিনি সেখানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) প্রেসিডেন্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া সাইডলাইনে কপ ২৬-সিভিএফের একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
‘সেখান থেকে তিনি লন্ডনে যাবেন। আমরা চেষ্টা করছি সেখানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় একটি বৈঠকের জন্য। এ নিয়ে কাজ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠকটি গ্লাসগোতে করতে চাইছে, কিন্তু আমরা চাই, এটি লন্ডনে হোক। আমরা বলেছি, এটি লন্ডনে হলে ভালো হয়।
‘এরপর ফেরার পথে ইউনেসকো কর্তৃক প্রদেয় বঙ্গবন্ধু পুরস্কার দেয়ার জন্য লন্ডন থেকে সরাসরি প্যারিসে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা চাই এবার এই পুরস্কার প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতেই দিক।’
তিনি জানান, ১১ নভেম্বর ওই পুরস্কারটি দেয়া হবে।
৪০ হাজার শ্রমিক নেবে রোমানিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া তাদের দেশের উন্নয়নে ৪০ হাজার শ্রমিক নেবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোমানিয়া বাংলাদেশ থেকে ৪০ হাজার শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে তারা সরকারিভাবে সবকিছু করতে চায় এবং অবৈধভাবে সেখানে যারা যাবে, তাদের ফেরত পাঠাবে। সেখানে অবৈধ থাকার কোনো সুযোগ নেই।
‘আমি তাদের বলেছি, আমাদের তো প্রাইভেট সেক্টর লোক পাঠায়। তখন তারা বলেছে, দুই দেশের সরকারের মাধ্যমে একটা বডি তৈরির মাধ্যমেই তারা তাদের প্রয়োজনীয় লোক নেবে।’
তিনি বলেন, ‘রোমানিয়ার শ্রমিকরা এখন পশ্চিম ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে চলে যাওয়ায় তারা শ্রমিক সংকটে পড়েছে। যতদূর জেনেছি তারা প্লাম্বার, কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার, মেনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, ডাক্তার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার নেবে।
‘আমাদের প্রবাসী কল্যাণের এদের পাঠাতে হবে, ওরা কী কী খাতে শ্রমিক নিতে চায়, আর আমরা কী কী দিতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা করার জন্য।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে রোমানিয়ার কোনো মিশন না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। কেন না শ্রমিক নেয়ার জন্য বাংলাদেশে মিশন থাকলে সুবিধা হবে। আমরা এখানে মিশন খোলার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত এক হাজার জনকে পাঠিয়েছি।
‘রোমানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি আমাদের দেশের লোককে এখন ভিসা নিতে দিল্লি যেতে হয়, কিন্তু করোনার কারণে দিল্লি যাওয়াও কঠিন। এখনও ৩০০ জনের ভিসা দিল্লিতে আটকে আছে। তখন তিনি বলেছেন, যতদিন ঢাকায় মিশন না হচ্ছে, ততদিন এক সপ্তাহের জন্য ঢাকায় লোক পাঠানো হবে ভিসা দিতে। তারা এক সপ্তাহ থেকে ভিসা দিয়ে চলে আসবে। প্রতি মাসে এটা হতে পারে।’
৮৬০ জনকে ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি
সার্বিয়া ও রোমানিয়া থেকে জার্মানিতে আশ্রয় নেয়া ৮৬০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটি। এরা উন্নত জীবনের লক্ষ্যে জার্মানিতে পালিয়ে গিয়েছিল।
মোমেন বলেন, ‘আগে এটা হতো সহজেই, কিন্তু এখন সবকিছু কঠিন। আমরা অবৈধদের ফেরত আনার জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। আমরা আইনের জালে বন্দি। তাদের ফেরত আনা হচ্ছে। ২৪ অক্টোবর থেকে এরা ফিরতে শুরু করবে।’