তীব্র গরমে রংপুর অঞ্চলের জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। প্রতিদিনই সকাল থেকে কড়া রোদ, সঙ্গে গরম হাওয়া। আশ্বিনের এই গরমে নাকাল মানুষ।
ভ্যাপসা গরমে সর্দি, কাশি ও জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ।
রংপুর আবহাওয়া অফিস বলছে, ভাদ্রতে খুব একটা গরম না পড়লেও আশ্বিনের শুরুতেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। গেল এক সপ্তাহ ধরে তপ্ত আবহাওয়া তপ্ত।
বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার এই অবস্থা থাকতে পারে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
রংপুর আবাহওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়লেও অবশ্য সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠার শঙ্কা নেই। চলতি মাসের শেষ দিকে ঝড়-বৃষ্টিও হতে পারে। ধীরে ধীরে তাপদাহ একটু একটু করে কমতে থাকবে।’
নগরীর পায়রা চত্বরে রিকশাচালক হামিদুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘গরমোত থাকা যায় না। দুপর (দুপুর) হইলে বেলা (সূর্য) মনে হয় মাতার উপর বসি আচে। পেটে খায় তাই কষ্ট করি গাড়ি চলাই।’
বোতলা এলাকার দিনমজুর রহমত আলী বলেন, ‘গরমোত কাজোত যাবার মনডা চায় না। এত গরম কেমন করি সহ্য করি’।
স্কুল শিক্ষক ফারহানা নাজনীন বলেন, ‘গরমে ফ্যানের বাতাস গায় লাগে না। দিনে রাতে একই গরম। তিনি বলেন, গরমে ছোট ছেলেটার দুদিন ধরে জ্বর। ডাক্তার বরেছে গরমে এমন হচ্ছে, চিন্তার কিছু নাই।’
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া নিয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ১০ অক্টোবর রোগী ছিল ২৫১ জন, ১১ অক্টোবর ২৬৯ ও ১২ অক্টোবর ছিল ২৮০ জন। যত রোগী ছাড়পত্র নিচ্ছে তার চেয়ে বেশি ভর্তি হচ্ছে।
মডার্ন মোড় এলাকার চন্দনা বেগম তার ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে জ্বর আর পেটের সমস্যা, তাই দুইদিন হইলো হাসপাতালোত ভর্তি হইচি।’
শিশু ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার আনম তানভীর চৌধুরী বলেন, ‘মূলত এই সময়ে শিশু ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।’
রংপুর সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিজেনাল চেঞ্জ এর কারণে জ্বরে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে । শিশুদের পাতলা কাপড় পরাতে হবে। জ্বর হলে প্যারাসিটেমল সিরাপ খাওয়ানো ও শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই, একটু সর্তক থাকতে হবে।’