বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস শুরু কবে?

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:০৩

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এ বছর স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান শুরুর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে কিছু কিছু শ্রেণিতে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ার ঘোষণা দেয়া হতে পারে। আগামী জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে স্কুল-কলেজে সশরীরে আংশিক পাঠদান কার্যক্রম। তবে কবে নাগাদ স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে, এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার।

তবে খুব শিগগির স্কুল-কলেজের বিভিন্ন শ্রেণিতে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। তবে প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে না।

শুধু চলতি বছরের ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম, নবম শ্রেণিতে দুই দিন এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক দিন ক্লাসে আসতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল-কলেজগুলোতে ক্লাস কার্যক্রম স্বাভাবিক হোক। স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান শুরু করার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

একই সুরে কথা বললেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে অনুমতি পেলেই স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বছর স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান শুরুর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে কিছু কিছু শ্রেণিতে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ার ঘোষণা দেয়া হতে পারে।’

শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার পরই স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার আশা করছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ করোনা প্রতিরোধী টিকার আওতায় চলে আসবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। আশা করছি, আগামী জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে। এর অংশ হিসেবে মাউশি থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের অ্যাকাডেমিক সুপারভিশন শুরু করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নভেম্বর মাসে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা হবে। সরকার আপাতত এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শেষ করার প্রতিই বেশি জোর দিচ্ছে।’

প্রাথমিকভাবে মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে করোনা প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে। ফাইল ছবি

শিক্ষাবিদরা যা বলছেন

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে অতি দ্রুত চলতি বছরের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করার তাগিদ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

জানতে চাইলে সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রিন্সিপাল ব্রাদার লিও পেরেরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে চলতি বছরের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার রিভাইস করা যেতে পারে। আমি মনে করি, এ বিষয়ে অতি দ্রুত সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করা উচিত।’

দ্রুত বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন এসওএস হারমান মেইনার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠানই সিলেবাস শেষ করতে পারেনি। তাই দ্রুত বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।’

টিকার আওতায় আসছে স্কুলশিক্ষার্থীরা

স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে মানিকগঞ্জের দুটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে করোনারোধী টিকা।

বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম।

তিনি বলেন, এই টিকা দেয়া হবে ‘টেস্ট রান’ হিসেবে। যাদের টিকা দেয়া হবে তাদের ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। টিকা দেয়ার পর পর্যবেক্ষণ করব কোনো প্রতিক্রিয়া হয় কি না। তারপর ঢাকায় বড় আকারে এ টিকা কার্যক্রম শুরু করব। এক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিবসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত হবেন।’

এর আগে গত ১২ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভাইভারস কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম বলেছিলেন, ‘চলতি সপ্তাহেই ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হবে।

‘সক্ষমতা অনুযায়ী সারা দেশের জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ২১টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে স্কুলশিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আশা করছি, চলতি সপ্তাহেই আমরা শুরু করতে পারব।

‘আমরা পরিকল্পনা করেছি প্রাথমিকভাবে আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে টিকা দেয়ার। তাহলে একসঙ্গে অনেক শিশুকে দিতে পারব। এটা তো চাইলে হবে না, জায়গা পেতে হবে, লোকবলের বিষয় আছে।’

তিনি বলেন, ‘স্কুলশিক্ষার্থীদের তালিকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরবরাহ করবে। তাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম প্ল্যাটফর্মে দিয়ে দেব। আমরা টিকা দেয়ার আগে টেস্ট রান করি। ৫০ থেকে ১০০ জনকে দিয়ে টেস্ট করব। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখব। এরপর বড় আকারে দেব। শিশুদের টিকাকেন্দ্র আলাদা হবে।’

চলতি সপ্তাহেই ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনারোধী টিকা পরীক্ষামূলকভাবে দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ২০২০ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ৯ লাখ এবং মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৯৭ লাখ ১১ হাজার ৩৬ জন।

এ বিভাগের আরো খবর