মাদক সেবন করার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ৯০ জন সদস্য।
২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ে চাকরি হারিয়েছেন পুলিশের এই সদস্যরা।
চাকরিচ্যুত সদস্যদের মধ্যে কনস্টেবলদের সংখ্যাই বেশি। আরও আছে উপপরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), সার্জেন্ট ও নায়েক।
গত ৭ অক্টোবর ডিএমপি সদরদপ্তর থেকে তার অধীনে সব ইউনিটে পাঠানো চিঠিতে চাকরিচ্যুতির এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের পক্ষে চিঠিটি ইস্যু করেছেন প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন।
মাদক সেবনের অভিযোগে চাকরিচ্যুতির পাশাপাশি মাদক কারবারে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
প্রতীকী ছবি
পুলিশ সদস্যদের যাতে মাদক সেবন থেকে দূরে রাখা যায় সে লক্ষ্যে নিয়মিত রোল কলের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি সদরদপ্তর।
শফিকুল ইসলাম ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকার পুলিশ কমিশনার দায়িত্ব নেয়ার পর ডিএমপির সদস্যদের ডোপ টেস্ট করানোর ঘোষণা দেন। এরপরই সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের টেস্ট করানো শুরু হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপি জানায়, ৮১ জন পুলিশ সদস্য মাদক নেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। তাদের মধ্যে ৬০ জনই কনস্টেবল। এ ছাড়া একজন পরিদর্শক, আটজন এসআই, ট্রাফিকের একজন সার্জেন্ট, নায়েক ছয়জন এবং এএসআই আছেন পাঁচজন।
পরে ৯ মাসে মাদক সেবনের অভিযোগে আরও ৯ জন সদস্য চাকরি হারান।
পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে থাকা মাদকাসক্ত সদস্যদের চিহ্নিত করার জন্য ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস ডিভিশন (আইএডি) বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এ ছাড়া স্ব স্ব ইউনিটে সন্দেহভাজন মাদকাসক্তদেরও তালিকা করছেন ঊর্ধ্বতনরা। এসব তালিকায় থাকা সদস্যদের আচরণ সন্দেহভাজন হলে বা মাদকসক্ত মনে হলে স্ব স্ব ইউনিটের মাধ্যমে রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
সেখানে শরীর থেকে নমুনা নিয়ে মাদক গ্রহণ করেছে কি না সেজন্য ডোপ টেস্ট করা হয়। ফলাফল পজেটিভ আসলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়ে থাকে।
পুলিশে মাদকাসক্তদের সংখ্যা কমে আসছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পুলিশ সুপার মনোয়ার হাসানাত খান। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে ৬-৭ আইটেমের মাদকের টেস্ট করিয়ে থাকি। আগের চেয়ে অনেক কমেছে। তবে প্রতিদিন সন্দেহভাজনদের নিয়ে আসা হচ্ছে।
‘পুলিশে যারা চাকরি করছেন, তাদের বাইরে নিয়োগের জন্য ডোপ টেস্ট করা হয়। এ ছাড়া মিশনে যাওয়ার আগেও আমাদের এখানে ডোপ টেস্ট করাতে আসেন পুলিশ সদস্যরা।’