বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আজও শিউরে উঠি, চোখে পানি এসে যায়’

  •    
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২১ ২১:৫১

বড়ইতলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সেদিনের ঘটনার কথা মনে করে আজও শিউরে উঠি, চোখে পানি এসে যায়। বড়ইতলা গণহত্যায় পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল স্থানীয় কিছু রাজাকার। তাদের অনেকেই এখনও জীবিত আছে। তবে তাদের কোনো বিচার হয়নি।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াইল ইউনিয়নের দামপাড়া গ্রামের ৬৭ বছর বয়সী দুলাল মিয়া। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর তিনি ও তার বড় ভাই মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন।

তবে হারিয়েছেন তাদের বাবাসহ আরও ৩৬৫ জনকে। বড়ইতলা গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেদিন ৩৬৫ জনকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে, গুলি করে হত্যা করে। পুড়িয়ে দেয় বেশ কয়েকটি গ্রাম।

দুলাল মিয়া সেদিনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনী সেদিন আইডি কার্ড দেয়ার কথা বলে সবাইকে জড়ো করে। লোকজন জড়ো হওয়ার পর প্রথমে ৮ থেকে ১০ জনকে রেললাইনের পাশে দাঁড় করিয়ে তারা বেত দিয়ে পেটায়। এভাবে মৃত্যু হতে দেরি হওয়ায় রড দিয়ে মাথায় বাড়ি মেরে পাশের জমিতে ফেলা শুরু করে।

‘আমার মাথায় তেমন জোরে আঘাত লাগেনি। আমি পড়ার পর আমার ওপর একের পর এক লাশ পড়তে থাকে। তারা তখন ব্রাশফায়ার করে সবাইকে মারা শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাওয়ার পর বড় ভাইকে জীবিত পেলেও বাবা হাফেজ আব্দুল তৌহিদকে মৃত অবস্থায় পাই।’

চিকনীর গ্রামের ৬০ বছর বয়সী ইসহাক ভূঁইয়া সেদিন হারিয়েছিলেন বাবা ও চাচাকে।

ইসহাক জানান, প্রতিবছর তারা বড়ইতলা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। তবে এ ঘটনার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার পাননি। শহীদের মর্যাদা দেয়া তো দূরের বিষয়, রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ-সুবিধাও তাদের দেয়া হয়নি।

বড়ইতলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেদিনের ঘটনার কথা মনে করে আজও শিউরে উঠি, চোখে পানি এসে যায়। বড়ইতলা গণহত্যায় পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল স্থানীয় কিছু রাজাকার। তাদের অনেকেই এখনও জীবিত আছে। তবে তাদের কোনো বিচার হয়নি।’

কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই শুনে আসছি এই স্মৃতিসৌধে একটি পাঠাগার ও একটি ছোট জাদুঘর হওয়ার পরিকল্পনা আছে। তবে এতদিনেও এর কোনো বাস্তবায়ন দেখিনি।’

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী জানান, প্রতিবছর এই দিনটি বড়ইতলা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিনটি আরও বড় পরিসরে পালনের উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি স্মৃতিসৌধটি পুনঃসংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর