পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের উন্নয়নে ১৬টি প্রস্তাব দিয়েছে।
এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট আয়ের ওপর ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। ফান্ডগুলো যাতে পুঁজিবাজারের বাইরে বিনিয়োগ করতে না পারে, সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিনিয়োগকারীদের এই সংগঠনের সভাপতি এ কে এম মিজান উর রশিদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত চিঠি বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের কাছে দেয়া হয়েছে।
চিঠি সম্পর্কে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি চিঠি এসেছে শুনেছি। তবে আমি তা এখনও দেখিনি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর দুরবস্থা যাচ্ছে। ভালো লভ্যাংশ দেয়ার পরও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে না।
‘আমাদের মনে হয়েছে, এ-সংক্রান্ত যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো বিএসইসিকে জানানো উচিত এবং কী কী উদ্যোগ নেয়া হলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন, সে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিএসইসি আমাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করলে এ খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আবারও আগ্রহী হবেন।’
সংগঠনের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরীকে নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। তার পর্যাপ্ত বিনিয়োগ নেই- এই বিষয়টি তুলে আনলে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে বড় বিনিয়োগ থাকলেই বিনিয়োগকারী হবে তা নয়, বরং বিনিয়োগ থাকলেই হবে।’
পুঁজিবাজারে ২০১০ সালে যখন মহাধসের সৃষ্টি হয়, তখন থেকে এই সংগঠনটি মাঠপর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মিছিল-আন্দোলন করে আসছে। এখনও যখন পুঁজিবাজারে ক্রমাগত পতন দেখা যায়, তখন মতিঝিলের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে ব্যানার নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়।
যদিও এই সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে স্বজনপ্রীতি বা বার্ষিক সাধারণ সভায় উপঢৌকন নেয়ার অভিযোগ আছে।
যেসব প্রস্তাব
বছর শেষে মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে এ খাতের বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ আশা করে থাকেন। এ জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট ইপিএসের ওপর ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনায় ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রত্যেক ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি টাকা প্রণোদনা তহবিল গঠন করে। তহবিল নীতিমালায় বলা আছে, যেসব মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড একাদিক্রমে বিগত ৩ বছর ন্যূনতম ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, কেবল সেসব ফান্ডে তহবিলের টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে। এই নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রত্যেক সম্পদ ব্যবস্থাপককে বছরে ন্যূনতম একটি মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা, খাতভিত্তিক এবং সূচকভিত্তিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রচলন করা, পুঁজিবাজারে যাতে বেশি হারে মেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত হয়, সে জন্য ফান্ডের আকার ৫০ কোটি টাকার বদলে ২০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।