বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কেবল শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব নয়’

  •    
  • ১২ অক্টোবর, ২০২১ ২২:৪৮

‘শক্তির পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক আদর্শ; যা জঙ্গিবাদের অসারতা প্রমাণ করতে সক্ষম। যেহেতু জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলো কোরআন, হাদিস ও ইসলামের ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা উদ্বুদ্ধ, কাজেই তাদের কোরআন, হাদিসের সঠিক আকিদা দিয়েই বোঝাতে হবে জঙ্গিবাদের পথ ভুল।’

শুধু শক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয় বলে রাজধানীতে একটি আলোচনায় বক্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীতে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের নিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।

সেগুনবাগিচার বাগিচা রেস্টুরেন্টে ওই গোলটেবিল বৈঠকের বিষয় ছিল ‘দক্ষিণ এশিয়ায় ধর্মান্ধতার উত্থান: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয়’।

এর আয়োজক ছিল হেযবুত তাওহীদ নামে একটি সংগঠন।

বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হেযবুত তাওহীদের এমাম ও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সোসাইটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর জ ই মামুন, দেশটিভির এডিটর ইন চিফ সুকান্ত গুপ্ত অলোক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জাকারিয়া কাজল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম।

হোসাইন সেলিম বলেন, ‘শক্তির পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক আদর্শ; যা জঙ্গিবাদের অসারতা প্রমাণ করতে সক্ষম। যেহেতু জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলো কোরআন, হাদিস ও ইসলামের ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা উদ্বুদ্ধ, কাজেই তাদের কোরআন-হাদিসের সঠিক আকিদা দিয়েই বোঝাতে হবে জঙ্গিবাদের পথ ভুল।’

তিনি বলেন, ‘তালেবানের ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপটে আবারও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিগত সময়ে ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে। মূলত এ ধরনের মুসলিমবিদ্বেষী ঘটনাগুলোই ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি ও প্রসারে পূর্ণ অবদান রেখে থাকে।‘

সেলিম বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে ধর্মের অপব্যবহার হওয়ায় দিন দিন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, হুজুগ, গুজব, ধর্মীয় উন্মাদনা ইত্যাদি বেড়েই চলছে। আর ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও বিভিন্ন ইস্যুতে একজোট হয়ে জ্বালাও-পোড়াও সহিংসতা করতে দেখা যায়।

‘যারা রাষ্ট্রধর্ম ইস্যু, কথিত নাস্তিকদের ফাঁসির দাবি, ভাস্কর্য-মোদিবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এসব গোষ্ঠীকে রাস্তায় নামতে ও সহিংসতা করতে দেখা গেছে, এরাই বিভিন্ন সময় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও ভিন্নমতের মুসলিমদের ওপর হামলা চালিয়ে এসেছে; যাদের বিরুদ্ধে কোনো সরকারই শক্ত ব্যবস্থা নেয়নি।’

বিভিন্ন ওয়াজে হেযবুত তাওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের মাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানোর দাবিও করেন সেলিম।

২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তাওহীদের সদস্যদের ওপর হামলা ও দুজন সদস্যকে জবাই করে হত্যার ঘটনাটি এমনই এক যৌথ আক্রমণের ঘটনা ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সেলিম বলেন, ‘ধর্মকে খাটো করে দেখার কোনো উপায় নেই। মানবতার কল্যাণে ধর্মকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু ধর্মব্যবসা চলতে দেয়া যায় না। ধর্মের যে ধারণা মামুনুল হক, রফিকুল ইসলাম মাদানীরা দিতে চান, এটা আল্লাহর দেয়া ইসলাম নয়, এটাই আমি সাধারণ মানুষকে বলতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, ইসলামের মধ্যে এত মতবিরোধ হয় না। কিন্তু আমাদের আলেম-ওলামারা আমাদের ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এতে মতবিরোধ তৈরি হচ্ছে।

‘আমরা এসব কথা বলায় আমাদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামের বাবুনগরী (হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী) বললেন, আমরা কাফের। মামুনুল হক বললেন, আমরা শয়তান, শয়তানের দল। আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। বলা হলো, আমাদের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে হবে। আমরা বলেছি, এসব হুমকি দিয়ে লাভ নেই। আমরা ইসলামের প্রকৃত আদর্শের সঙ্গে আছি।’

সংগঠনের নাম পরিবর্তনের পরামর্শ

গোলটেবিল বৈঠকে হেযবুত তাওহীদকে নাম পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন সাংবাদিকরা। সেই সঙ্গে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে তার কাজ কী, সে বিষয়টিও স্পষ্ট করার তাগাদা দেন। সংগঠনের অর্থের উৎস, গঠনতন্ত্রসহ নানা বিষয়ে জনমনে ধারণা স্পষ্ট করারও তাগিদ দেয়া হয়।

জ ই মামুন বলেন, ‘অন্য একটি সংগঠনের নামের মিলের কারণে হেযবুত তাওহীদ অনেক হয়রানির শিকার হয়েছে। এ জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আমি মনে করি, আপনাদের সংগঠনের নাম পরিবর্তন করলে বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে হেযবুত তাওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার করতে চাই।‘

তিনি বলেন, ‘আমরা সব ধর্ম-মত-পদ নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রোপাগান্ডা দ্বারা মানুষ প্ররোচিত হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর