করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এরই মধ্যে কয়েকটির আবাসিক হল খুলে দেয়া হয়েছে, নেয়া হচ্ছে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা। শিক্ষাব্যবস্থার অচলাবস্থা কাটাতে ও ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক চেহারা ফেরাতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর সরকারি সিদ্ধান্তে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। করোনা সতর্কতায় নেয়া হচ্ছে পদক্ষেপ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও উপাচার্যদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও তা এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি নানা জটিলতায়।
সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধন শেষে কিছু ব্যবস্থা নেয়া সাপেক্ষে যেকোনো দিন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল সে বৈঠকে। তবে এ মাসেই প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ১৭ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সশরীরে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুস সামাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বর্ষের সশরীরে ক্লাস শুরু হবে ১৭ অক্টোবর থেকে। তবে কোনো বিভাগে সশরীরে ক্লাস নেয়া সম্ভব না হলে বা তারা কোনো সমস্যা দেখলে অনলাইনে ক্লাস নেবেন।
‘এর আগে ১৬ তারিখের মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে টিকা নিতে হবে। সশরীরে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিভাগের শিক্ষার্থী কম, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে একসাথে ক্লাস নেবেন। আর যেসব বিভাগে শিক্ষার্থী বেশি তাদের কয়েক শিফটে ক্লাস নিতে হবে, যেন স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে।’
দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গত ৫ অক্টোবর অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো। এরপর ১০ অক্টোবর হল খুলেছে সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলেছে ১০ অক্টোবর। আর ২১ অক্টোবর থেকে অনলাইনের পাশাপাশি সশরীরে ক্লাস শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, ‘২১ অক্টোবর থেকে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া শুরু হয়েছে গত ৭ অক্টোবর থেকে। তবে কবে নাগাদ সশরীরে ক্লাস শুরু হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হলে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। ক্লাস শুরুর তারিখ নির্ধারণ করে পরে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেয়া হয়েছে ১ অক্টোবর। ইতিমধ্যে পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা সশরীরে অংশ নিচ্ছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্সে) আবাসিক হল খুলে দেয়া হয়েছে গত ৭ অক্টোবর। আর শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক ক্লাসে সশরীরে অংশ নেবেন ১৭ অক্টোবর থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, ‘খুব শিগগিরই পুরোদমে ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেয়া হবে। এর আগে অনলাইনে তাত্ত্বিক ক্লাস চলবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হল খুলবে ১৮ অক্টোবর, পরদিন থেকে শুরু হবে সশরীরে ক্লাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘সশরীরে ক্লাস চালুর জন্য ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হলগুলো খুলবে ১৭ অক্টোবর থেকে। আর সশরীরে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে ২০ অক্টোবর থেকে।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর থেকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে ২০ তারিখ থেকে।’
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট): করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেয়ার সনদ দেখিয়ে ২৮ অক্টোবর থেকে হলে উঠতে পারবেন রুয়েট শিক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে তারা পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে সশরীরে অংশ নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে সশরীরে অংশ নিচ্ছেন। তাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট ২৮ অক্টোবর থেকে হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেয়া হবে ১৮ অক্টোবর, আর অন্যান্য শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবেন ২৬ অক্টোবর থেকে।
তবে কবে নাগাদ সশরীরে ক্লাস শুরু হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট): আগামী ২২ অক্টোবর থেকে কুয়েটের হল খুলবে, আর সশরীরে ক্লাস শুরু হবে ২৫ অক্টোবর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি): ময়মনসিংহে বাকৃবির স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্স পরীক্ষার্থীদের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর হল খুলে দেয়া হয়েছে।
তবে সশরীরে ক্লাস কবে নাগাদ চালু হতে পারে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়: ময়মনসিংহের ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেয়া হবে ২৫ অক্টোবর। আর সশরীরে ক্লাস চালুর বিষয়টি স্ব স্ব বিভাগ ঠিক করবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হল খুলবে ২৫ অক্টোবর। আর সশরীরে ক্লাস শুরু হবে নভেম্বর মাসের ২ তারিখে।
বিষয়টি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে ১৮ অক্টোবর। এর আগে ১৫ অক্টোবর থেকে খুলবে আবাসিক হল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। এর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলেছে গত ৪ অক্টোবর। আর ২১ অক্টোবর থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাদেকুল আরেফিন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসিক হল খুলেছে ৩০ সেপ্টেম্বর। ইতোমধ্যে সশরীরে পরীক্ষা ও ক্লাসে অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে দেয়া হচ্ছে। পরদিন থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
বিষয়টি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরই পুরোদমে ক্লাস শুরু হবে।’
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়: সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে তা স্থগিত হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, ‘পরীক্ষা ও ক্লাস শুরুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য গত ৭ অক্টোবর হল খুলে দেয়া হয়। আর অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবেন ২০ অক্টোবর থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘২০ অক্টোবর থেকেই শুরু হবে সশরীরে ক্লাস।’
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ২৫ অক্টোবর। এদিন থেকেই বিভিন্ন বিভাগে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রুস্তম আলী।
এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) খোলার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘১২ অক্টোবর আমাদের মিটিং আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত হতে পারে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমরান কবির চৌধুরী জানান, আগামী ২৭ অক্টোবর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আবাসিক হল ও ক্লাস শুরুর বিষয়ে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য আবদুল বাকি।
এ ছাড়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইলের মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল খোলা এবং সশরীরে ক্লাস চালু বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তারা।