বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করাচির কোমো খাতুন চুয়াডাঙ্গা থেকে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি?

  •    
  • ১২ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:০৯

কোমো জানান, তার ভাইয়ের সঙ্গে শত্রুতার জেরে এক নারী তাকে তুলে নিয়ে ভারত পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে তাকে পাকিস্তানে পাঠানো হয়। সে সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন মেয়েকে পাচার করা হয়।

পাকিস্তান টুডে নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে চার দিন আগে প্রকাশ হওয়া ভিডিও নিয়ে আলোচনা চলছে চুয়াডাঙ্গায়। কারণ সেই ভিডিওতে এক নারী দাবি করেছেন, তিনি চুয়াডাঙ্গার মেয়ে। আট বছর বয়সে তাকে অপহরণের পর পাঠিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানে। তিনি দেশে এসে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান।

ভিডিওর ওই নারী জানান, তার নাম কোমো খাতুন, বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকায়। তার বাবার নাম শেখ মনির উদ্দীন।

সেই ভিডিও দেখে আলমডাঙ্গার এক নারী দাবি করেছেন, কোমো তার হারিয়ে যাওয়া বোন।

ইউটিউবের ওই ভিডিও সাক্ষাৎকারে কোমো জানান, ১৯৭৫ বা ৭৬ সালের দিকে তার বয়স ছিল ৮ বছর। তখন পাকিস্তান নিয়ে গিয়ে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় ৫৫ হাজার টাকায়। যে ব্যক্তি তাকে কিনে নেন, তার মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের সঙ্গে চার বছর পর বিয়ে দেন। বরের বয়স সে সময় ৩০ বছর। প্রায় ৪৬ বছর ধরে পাকিস্তানের রাজধানী করাচিতে আছেন তিনি, সংসারও করছেন।

কোমো আরও জানান, তার ভাইয়ের সঙ্গে শত্রুতার জেরে এক নারী তাকে তুলে নিয়ে ভারত পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে সড়কপথে তাকে পাকিস্তানে পাঠানো হয়। সে সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন মেয়েকে পাচার করা হয়। তাদের বেশ নির্যাতন করা হতো।

কোমো ভিডিওতে বলেন, তার চার বোন ও দুই ভাই আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ায় থাকেন। তবে তিনি শুধু মেজো বোনের নাম আমিরন বলে মনে করতে পারেন।

তিনি একবারের জন্য হলেও দেশে এসে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে জানান।

এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর ফেসবুকে তা ভাইরাল হয়। সেটি নজরে আসে আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও বাবুপাড়ার বাসিন্দা আলী আজগর সাচ্চুর।

এরপর খোঁজখবর করে কোমোর পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।

সাচ্চু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ইউটিউব দেখতে দেখতে হঠাৎ একটি ভিডিও সামনে আসে। তাতে বাংলাদেশি একটি মেয়ে কথা বলছিল। ভিডিওটা পুরোটা দেখি। একসময় কোমো খাতুন নামে ওই নারী তার বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বাবুপাড়ায় বলেন। একসময় তার ভাইবোনদের কথাও বলেন।

‘তার বোন সাজেদা খাতুন ওরফে আমিরনের নাম করেন। আমি বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করি। খুঁজে বের করি আমিরন খাতুনকে। তার বাড়ি আমার পাড়াতেই। আমি আমিরন খাতুনকে তার কোনো বোন হারিয়ে গেছে কি না জিজ্ঞেস করি। তখন আমিরন খাতুন তার ছোট বোন কোমো খাতুন অনেক ছোটবেলায় হারিয়ে গেছে বলে জানান।’

সাচ্চু জানান, ওই পরিবারটি হতদরিদ্র। কোমোর বাবা মারা যাওয়ার পর এক ভাইও মারা যান। আরেক ভাই মজিবর রহমান ঝিনাইদহে থাকেন। বোনদের বিয়ে হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি তখন ভিডিওটা দেখালে আমিরন খাতুন তার বোন কোমো খাতুনকে শনাক্ত করেন। তাদের বোনদের চেহারা প্রায় একই।’

তার কাছ থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে কল করা হয় আমিরনকে।

নিউজবাংলাকে তিনি জানান, ভাই-বোনদের মধ্যে কোমো ছিলেন সবার ছোট। দেখতে ছিলেন বেশ সুন্দর। ছোট থাকতেই একদিন তিনি হারিয়ে যান। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সবাই ভেবেছিলেন হয়তো মেয়েটা মারা গেছে।

আমিরন বলেন, ‘ভিডিও দেখেই আমি আমার বোনকে চিনতে পেরেছি। সে আমার নাম বলেছে। বাবার নামও বলেছে। চেহারায়ও মিল আছে। তাকে আমি ফেরত পেতে চাই। আপনারা সাহায্য করেন।’

জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোমো খাতুনকে ফিরিয়ে আনতে এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আবেদন করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহযোগিতা করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর