বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টানতে পারছে না বড় মূলধনিও, বাড়ছে হতাশা

  •    
  • ১২ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:৫৩

দর সংশোধন শুরু হওয়ার পর সূচক টেনে তোলা বড় মূলধনি আইসিবি, বেক্সিমকো, লাফার্জ, বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দরও কমছে। সঙ্গে কমছে আগে থেকে পতনের মধ্যে থাকা অন্য খাতের কোম্পানিগুলোর দরও।

আগের দিন ২২ পয়েন্টের পর এবার পতন ৩১ পয়েন্ট। টানা এক মাস দর সংশোধনের মধ্যে পুঁজিবাজারের আকার ছোট হওয়ার বিপরীতে বাড়ছে হতাশা।

টানা দুই মাসের উত্থানে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে ‍উচ্ছ্বাস-স্বপ্ন ছিল, হারিয়ে গেছে তা। সূচকের সঙ্গে কমছে লেনদেন। ছড়িয়ে পড়া হতাশা বড় হচ্ছে দিনে দিনে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দর সংশোধন শুরু হওয়ার পর তিন সপ্তাহ বড় মূলধনি বেশ কিছু কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে সূচকে প্রভাব পড়েনি এতটুকু।

বরং বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, আইসিবি, বিএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাতের মতো কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির কারণে দর সংশোধনেও সূচক বাড়তে শুরু করে।

অন্যদিকে এর আগের তিন মাসে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী ছিল, তার মধ্যে সিংহভাগের দর কমেছে ব্যাপক হারে। ১০ থেকে ৩০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি দর কমেছে বহু কোম্পানির।

এই গোটা সময়ে যেদিন সূচক বেড়েছে, তার প্রতিটি দিনই দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তুলনায় দরপতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি ছিল।

তবে গত সপ্তাহের শেষ দিন আর চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন দরপতন হওয়া কোম্পানির তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা দ্বিগুণ বা তার কাছাকাছি হওয়ার পর সোমবার আবার আগের অবস্থা তৈরি হয়।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

এক সপ্তাহ ধরে দাম কমছে আইসিবি, বেক্সিমকো, লাফার্জ, বেক্সিমকো ফার্মার দরও। ফলে পতনের মধ্যে এবার আর কোনো বড় মূলধনি কোম্পানিও তা টেনে তুলতে পারছে না।

মঙ্গলবার ৯৩টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৪টির।

রবি, আইসিবি, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের দরপতন সূচক কমাতে ভূমিকা রেখেছে বেশি।

দর বৃদ্ধির তুলনায় কমেছে আড়াই গুণ শেয়ারের। টানা পতনের মধ্যে থাকা বিমা ছাড়া অন্য সব খাতেই গেছে বাজে দিন।

দর সংশোধনী শুরু হওয়ার পর সূচক টেনে তোলা বড় মূলধনি আইসিবি, বেক্সিমকো, লাফার্জ, বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দরও কমছে। সঙ্গে কমছে আগে থেকে পতনের মধ্যে থাকা অন্য খাতের কোম্পানিগুলোর দরও।

সূচক টেনে নামাল বড় মূলধনি কোম্পানি

দরপতনের বৃত্তে থাকা রবি মাঝে একদিন দাম বৃদ্ধির পর আবার ফিরে এসেছে পতনের ধারায়। শেয়ার দর ৪২ টাকা থেকে ১ টাকা ১০ পয়সা হারিয়ে ৪০ টাকা ৯০ পয়সা হয়ে যাওয়ার ঘটনায় সূচকের পতন হয় ৫.১২ পয়েন্ট।

আরেক বড় মূলধনি কোম্পানি আইসিবির শেয়ারের দাম কমেছে আরও বেশি। শেয়ারদর ১৫৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪৮ টাকা ৬০ পয়সা। শেয়ার দর ৩.৯৯ শতাংশ কমায় সূচকে পতন হয়েছে ৪.৬৫ পয়েন্ট।

সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা ১০টি কোম্পানি

দর হারানো লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট সূচকের পতন ঘটিয়েছে ৪.৪৩ পয়েন্ট। শেয়ার দর কমেছে ৪ টাকা। ১০২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে নেমে এসেছে ৯৮ টাকা ৮০ পয়সা।

আরেক বড় মূলধনি গ্রামীণ ফোনের শেয়ার দর ২ টাকা ২০ পয়সা কমার পর সূচক পড়েছে ২.১৪ পয়েন্ট।

ওয়ালটন, ইউনাইটেড পাওয়ার, ডাচ বাংলা ব্যাংক, বিএসআরএম স্টিল, বেক্সিমকো ফার্মা ও তিতাস গ্যাসের দরপতনও সূচকের পতনে ভূমিকা রেখেছে।

দর বাড়ল বিমায়

হতাশা কাটিয়ে বিমা খাতের শেয়ারের দর বাড়ল। ১৩১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

লেনদেনে বিমা খাতের ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ১৫টির দর। অপরিবর্তিত ছিল বাকি দুটির দর।

এ খাতের সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর বেড়েছে নিটল ইন্স্যুরেন্সের ৪.৭৯ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ টাকা।

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.৬৫ শতাংশ। শেয়ার দর ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ টাকা ৩০ পয়সা।

পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১ টাকা ৬০ পয়সা বা ৩.৬৪ শতাংশ।

বিমা খাতের সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৪.০৭ শতাংশ। এছাড়া পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ২.৩৮ শতাংশ, সোনালী লাইফের শেয়ার দর কমেছে ১.৮৪ শতাংশ।

আগ্রহ বেড়েছে ব্যাংকে, আর্থিক খাতে আরও পতন

ব্যাংক খাতে বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমলেও সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির তিনটি এই খাতের ছিল। বহুদিন পর শীর্ষ তালিকার প্রথমে এই খাতের কোম্পানিকে দেখা গেল।

এক মাস ধরে পতনমুখি এনআরবিসির দাম বেড়েছে ৯.৭১ শতাংশ। শেয়ার দর ২৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭ টাকা ১০ পয়সা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর ৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ৬০ পয়সা। দর বৃদ্ধির হার ৭.৬৯ শতাংশ।

এছাড়া সাউথবাংলা এগ্রিকালচারাল ব্যাংকের শেয়ার দর ৬.০৪ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর ২.২৯ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের দর বেড়েছে ০.৯৮ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি ২.৪৬ শতাংশ কমেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর। এছাড়া শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের দর ১.৮৫ শতাংশ, ডাচবাংলা ব্যাংকের দর ১.৭৩ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের দর কমেছে ১.৩২ শতাংশ।

সব মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ১৩টির দর। বাকি ৯টির দর ছিল অপরিবর্তিত।

এই খাতে লেনদেন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। সব মিলিয়ে হাতবদল হয়েছে ১৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১২৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।

ব্যাংকের লেনদেনে আশা থাকলেও পতনের আর্থিক খাত এখনও উঠে দাঁড়াতে পারেনি। মঙ্গলবারও এ খাতের পতনে হতাশা বাড়িয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

এদিন আর্থিক খাতের লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র দুটির। আর দর হারিয়েছে ১৯টির। আর একটির দর ছিল আগের মতোই। একটির লেনদেন দীর্ঘদিন ধরেই স্থগিত।

লেনদেন হয়েছে মোট ১০৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

আর্থিক খাতের সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানির ৪.৪১ শতাংশ। এছাড়া আইসিবির দর ৪.২৫ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্সের দর ৩.৯৩ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের দর ৩.৮৪ শতাংশ, বিডি ফাইন্যান্সের দর ৩.৪৮ শতাংশ, বিআইএফসির দর ২.৮৫ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর ২.৫৬ শতাংশ কমেছে।

দর বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৫.৮৪ শতাংশ আর বে লিজিংয়ের ০.৯৭ শতাংশ।

বেশি পতন বস্ত্র খাতে

এই খাতের বস্ত্র খাতের ৪৬টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। মাত্র ৮টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

লেনদেন হয়েছে মোট ২০৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

লেনদেনে এ খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে কাট্টালি টেক্সটাইল মিলসের ৭.৬৩ শতাংশ। এছাড়া আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসের শেয়ার দর বেড়েছে ২.৬৪ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলসের ৭.৫০ শতাংশ। শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করা এনভয় টেক্সটাইল মিলসের শেয়ার দর কমেছে ৬.৫৯ শতাংশ। তাল্লু স্পিনিং মিলসের শেয়ার দর কমেছে ৬.১৪ শতাংশ, আলিফের দর কমেছে ৫.৯১ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো পাঁচটি কোম্পানিই এই খাতের।

সূচক টেনে তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে এই ১০টি কোম্পানি

সিমেন্ট খাদ্য, জ্বালানি, প্রকৌশলে হতাশা বেশি

সাম্প্রতিক সময়ে চাঙা হয়ে উঠা সিমেন্ট খাতে এক দিনে সাতটি কোম্পানির সবগুলোই দর হারিয়েছে। খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং প্রকৌশল খাতেও গেছে বাজে দিন।

খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতে আগের দিন এ খাতে লেনদেন ছিল ৮৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ৬০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।। ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে, বেড়েছে মাত্র দুটির।

জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে চারটির। দকমেছে ১৯টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১৯২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২০১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

প্রকৌশল খাতের মোট লেনদেন হয়েছে মোট ১৫৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

৪২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার দর কমেছে ৩৬টির, বেড়েছে কেবল পাঁচটির শেয়ার দর।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩১৩ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে।

শরিয়াভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৫ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৯১ দশমিক ০৪ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৪৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে।

দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর