অ্যাপসভিত্তিক ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের নামে সুদের অবৈধ কারবারির অভিযোগে দুই চীনাসহ একটি চক্রের সাত সদস্যকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আসামিদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ধানমন্ডি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মো. এশারত আলী আসামিদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- চীনা নাগরিক হি মিংশি ও ইয়াং সিকি, মজুমদার ফজলে গোফরান, আহসান কামাল, হিমেল অর রশিদ, নাজমুস সাকিব ও জেরিন তাসনিম বিনতে ইসলাম।
এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম ইউনিটের এসআই প্রাণ কৃষ্ণ সরকার ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধীতা করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এশারত আলী।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নাকচ করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ৮ অক্টোবর ওই আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
একই মামলায় ইমানুয়েল এডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর আলম, শুভ গোমেজ ও আকরাম আলী নামে আরও পাঁচ আসামি গ্রেপ্তার হয়ে আগে থেকেই কারাগারে আছেন। মামলাটিতে কারাগারে থাকা আসামি এখন ১২ জন।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসামিরা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই থান্ডার লাইট টেকনোলজি লিমিটেড, নিউ ভিশন ফিনটেক লিমিটেড ও বেসিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করত। আইনগত অনুমোদন ও অনুমতি ছাড়াই তারা গ্রাহকের তথ্য চুরি করে নিত।
গ্রাহকরা এসব অ্যাপ ইন্সটল করলে তাদের অজান্তেই মোবাইলের ক্যালেন্ডার ইভেন্ট, ফোন নম্বর, ফোনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সংরক্ষিত মেসেজ বক্সের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিত চক্রটি। শুধু তাই নয়, দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারণসহ তার সঠিক অবস্থানও চিহ্নিত করতে পারতো তারা।
এ ছাড়া টিকালা, ক্যাশম্যান, র্যাপিড ক্যাশ, আমার ক্যাশ-এর মত অ্যাপগুলোতে জামানতবিহীন লোন দেয়ার নামে অতিরিক্ত হারে সুদের কারবার করার অভিযোগ আছে চক্রটির বিরুদ্ধে। এসব অ্যাপসের সার্ভার চীনে অবস্থিত। সেখানে থেকে পরিচালিত হয়।
কিছু চীনা নাগরিক এসব অ্যাপের মাধ্যমে জামানতবিহীন স্বল্প সুদে লোন দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি গ্রাহকদের আকৃষ্ট করত। তাদের বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে গ্রাহকরা লোন নিয়ে স্বল্প সুদের পরিবর্তে উচ্চহারে সুদ দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
প্রতারণার শিকার একজনের অভিযোগ পেয়েই ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।