একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও শিক্ষক ড. ইনামুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নাট্যাঙ্গনে ইনামুল হকের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জামাতা সাজু খাদেম নিউজবাংলাকে ইনামুল হকের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, ‘ঠিক কী কারণে তিনি মারা গেছেন, এটা এখনই বলতে পারছি না। তার ব্যাক পেইনের সমস্যা ছিল দীর্ঘদিন।
‘সেই সমস্যাতেই তিনি বাসায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। তাকে আমরা ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
ফেনীর সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৪৩ সালের ৭ মার্চ জন্ম ইনামুল হকের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষ করে ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রসায়ন বিভাগে। ১৯৮৭ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশ নেন ইনামুল হক। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন ইনামুল। তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্র, বিশেষ ম্যাগাজিন এবং বই আকারে প্রকাশ হয়েছে।
ইনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী ও মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র।
ড. ইনামুল হকের দাম্পত্যসঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক।
২০১২ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান ইনামুল হক।