বর্ণিল আয়োজনে সারা দেশে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। দেবীর আগমন ঘিরে ভক্তদের পদচারণায় মুখর সব মণ্ডপ-মন্দির।
এর বাইরে নয় বাগেরহাটের উপাসনালয়গুলো। তবে ভাটা পড়েছে শিকদারদের বাড়ির আয়োজনে, যারা বিগত বছরে বড় আয়োজন করে দৃষ্টি কেড়েছিল দেশের মানুষের।
হিন্দু ধর্মের নানা দেব-দেবীর ১০১টি প্রতিমা নিয়ে ২০১০ সালে দুর্গাপূজার আয়োজন করে শিকদার বাড়ির ছেলে শিল্পপতি লিটন শিকদার। এরপর থেকে প্রতি বছর প্রতিমার সংখ্যা বাড়াতে থাকেন তিনি।
রাতারাতি সারা দেশে শিকদার বাড়ির দুর্গাপূজার সুনাম ছড়িয়ে পরে। সেই সঙ্গে পূজা উপলক্ষে সংসদ সদস্য, মন্ত্রীসহ চিত্রজগতের নায়ক-নায়িকা ও কণ্ঠ শিল্পীদের আগমন শিকদার বাড়ির পূজায় যোগ করে ভিন্ন মাত্রা।
প্রতিমা তৈরির দিক দিয়ে শিকদার বাড়ির মণ্ডপকে এশিয়ার সবচেয়ে বড় মণ্ডপ দাবি করেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে সীমিত করা হয় আয়োজন।
গত বছরের মতো এবারও স্বল্প পরিসরে পূজার আয়োজন করছে তারা। সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশনা মেনে দর্শনার্থীদের না আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
লিটন শিকদার বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে গত বছরের মতো এ বছরও স্বল্প পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, আগামীতে বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে।’
লিটন শিকদারের বড় ভাই শিশির শিকদার বলেন, ‘করোনার কারণে গত দু’বছর ধরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজায় আমাদের এখানে লাখ লাখ মানুষের আগমন ঘটত।
‘প্রতিবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রায় দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করত এখানে। কিন্তু করোনা সব বদলে দিয়েছে। তাই সরকারি নির্দেশনা মেনে আমরা ছোট পরিসরে আয়োজন করেছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দেশি-বিদেশী দর্শনার্থীদের শিকদার বাড়ির দুর্গাপূজায় না আসার অনুরোধ করছি।’
শিকদার বাড়ির দুর্গা প্রতিমা করেছেন বিজয় কৃষ্ণ বাছাড়। তিনি বলেন, ‘শিকদার বাড়িতে ২০১০ সাল থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও আমরা শুধু মা দুর্গার প্রতিমা তৈরি করেছি। আশা করছি ভগবানের কৃপায় পৃথিবী থেকে এই করোনা ভাইরাস বিদায় নিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক হবে। আমারও আবার শত শত প্রতিমা তৈরি করব।’
বাগেরহাট জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবির) তথ্য অনুয়ায়ী, বাগেরহাটে এ বছর ৬২৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলার চিতলমারী উপজেলায় সব থেকে বেশি। সেখানে ১৪৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাগেরহাট পুলিশ সুপার আরিফুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য প্রতিবছরের মতো এ বছরও পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করবেন। পূজা মণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ’