বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পেঁয়াজের ঝাঁজে বিপাকে নিম্নবিত্ত

  •    
  • ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০১:১৫

রিকশাচালক লতিফ হোসেন বলেন, ‘পরিবারে স্ত্রী, দুডা ছোট ছোল আছে। হামার আয়ের উপর নির্ভর করা সংসার চলে। আজক্যা বাজারোত আসিছি তরকারি কিনবার, আছা দেখি পেঁয়াজের দাম বাড়া গেছে প্রতি কেজিত ১০-১২ টেক্যা করা। এখন হামাকে মতো গরীব মানুষ এত দাম দিয়া কীভাবে পেঁয়াজ কিনমু কও!’

নওগাঁয় হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দামে দেখা দিয়েছে ঊর্ধ্বগতি। সপ্তাহের ব্যবধানে জেলায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।

হঠাৎ করে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন স্থানীয় ক্রেতা ও কৃষি বিভাগ। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারি বাজার থেকে তাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামেই বিক্রি করেছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি নওগাঁর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫০ হাজার ২৮৯ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। গত বছর যা ছিল ৪৭ হাজার ৬৯০ টন। আর জেলায় চাহিদা রয়েছে ৩০ হাজার ৫৭৫ টন।

নওগাঁ শহরের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৮-৫০ টাকায়।

নওগাঁ শহরের কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়েছিলেন উকিল পাড়ার গৃহবধূ রাজিয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা করে। সাত দিন আগে ছিল ৪৩-৪৫ টাকা কেজি। এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা করে।

‘হঠাৎ করে এমনভাবে দাম বেড়ে গেলে আমরা কিনব কীভাবে। আমাদের মত নিম্নআয়ের মানুষ যারা আছে তাদের কত অসুবিধা হচ্ছে এটা দেখার কেউ নাই।’

রিকশাচালক লতিফ হোসেন বলেন, ‘পরিবারে স্ত্রী, দুডা ছোট ছোল আছে। হামার আয়ের উপর নির্ভর করা সংসার চলে। আজক্যা বাজারোত আসিছি তরকারি কিনবার, আছা দেখি পেঁয়াজের দাম বাড়া গেছে প্রতি কেজিত ১০-১২ টেক্যা করা।

‘এখন হামাকে মতো গরীব মানুষ এত দাম দিয়া কীভাবে পেঁয়াজ কিনমু কও! হামার তো মনে হয় বাজার দর তদারক করা হয় না ঠিক মতন।’

বাজারের খুচরা দোকানি বাবলু হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে খরচ পড়েছে ৫৬ টাকা। বিক্রি করচি ৫৮-৬০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৪ টাকা।’

স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘পেঁয়াজের বড় বাজার রাজশাহীর নলডাঙ্গা ও পাবনার তাহেরপুর। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দাম উঠানামা করে। যে দামে পেঁয়াজ কেনা হোক না কেন দামের সাথে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ যোগ করা হয়। এরপর তার সাথে প্রতি কেজিতে আড়াই টাকা লাভে পাইকারি বিক্রি করে থাকি আমরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ বা আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজই ছিল ৩২-৩৩ টাকা। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসায় দাম এখনও কিছুটা কম আছে। আমদানি বন্ধ হলেই দেশি পেঁয়াজ দ্বিগুণ দামে বিক্রি শুরু হবে।’

বিনদ সরকার নামে আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমদানির পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমদানির পেঁয়াজের দাম যে হারে বেড়েছে সে তুলনায় দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়েনি।’

এভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের হাত দেখছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। নওগাঁ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ার কারণ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের কারসাজি।’

‘বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ আসলে দাম কমে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর