কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় ৩৫ বছর আগে মৃত এক নারীকে জীবিত দেখিয়ে অন্যের নামে জমি রেজিস্ট্রি করার মামলায় উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
কুড়িগ্রামের মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সেফাতুল্লাহ রোববার দুপুরে সাবরেজিস্ট্রার নজরুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার আরেক আসামি জহুরা খাতুনকেও কারাগারে পাঠায় আদালত।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা প্রদীপ রায় জানান, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আদালতে মামলাটি করেন রাজীবপুর উপজেলার আব্দুল করিম নামে একজন। মামলাটি তদন্ত করে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুল করিমের দাদি দৌলতন নেছা ৩৫ বছর আগে মারা যান। এরপর তার নামে থাকা ৫৪ শতাংশ জমি ওয়ারিশরা ভোগদখল করে আসছিলেন।
এর মধ্যে উপজেলার গোল্ডেন লাইফ একাডেমি নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইসমাঈল হোসেন তার মা জহুরা খাতুনকে দৌলতন নেছা সাজিয়ে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সেই জমির ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটির নামে দানপত্র করে নেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, সাবরেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম যাচাই-বাছাই না করেই জহুরা খাতুনকে মৃত দৌলতন নেছা হিসেবে জীবিত দেখিয়ে দলিল করে দেন। একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ইসমাঈল জমি দখল নিতে গেলে করিম তাতে বাধা দেন। তখন ইসমাঈল দলিল দেখালে করিম বিষয়টি জানতে পারেন।
ওই ঘটনায় আদালতে মামলা করলে বিচারক রাজীবপুর থানার পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে।
সিআইডি তদন্ত শেষে সাবরেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম, দলিল লেখক নুরুন্নবী সরকার, দৌলতন নেছা হিসেবে পরিচয় দেয়া জহুরা খাতুন, গাল্ডেন লাইফ একাডেমির পরিচালক ইসমাঈল হোসেনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
জিআরও প্রদীপ রায় বলেন, আসামিরা এতদিন অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। রোববার তারা আদালতে গিয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাকি আসামিরা এখনও জামিনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের এই নিবন্ধন কর্মকর্তা।