১৯৯০ সালে আন্দোলনের সময় হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের ফাঁসি হওয়ার কথা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে রোববার শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বলেন, ১০ অক্টোবর আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুনলাম সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আমাদের ছাত্রদলের এক নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ খবরে সারা দেশের রাজপথে মানুষ উত্তাল সমুদ্রের মতো ধেয়ে আসল। সেদিনই এরশাদ বার্তা পেয়ে গেলেন আর কোনোভাবে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। সে সময়ই তো এরশাদের ফাঁসি হওয়ার কথা।
রিজভী বলেন, ‘ওই সময় বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তার ক্ষমতায় আসেন। এরশাদ তখন বলেন সেনাবাহিনীকে অংশীদারত্ব দিতে হবে। এরপর রাতের অন্ধকারে রাইফেল নিয়ে জোর করে বিচারপতিকে তিনি ক্ষমতাচ্যুত করলেন। তাকে একটি বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হলো।
‘বিচারপতি সাত্তার নিজেই বলেছেন, তাকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে এ বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এরশাদ যে ডাকাত, এরশাদ যে দস্যু, এরশাদ যে গণতন্ত্র হত্যাকারী এটার আর কোনো প্রমাণ লাগে না।’
বিএনপির সিনিয়র এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এরশাদ অনেককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন। আওয়ামী লীগকে ম্যানেজ করেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে ম্যানেজ করেছেন, বিএনপিকে ভাগ করে হুদা-মতিন বিএনপি বানিয়েছেন। কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সবকিছু ভেসে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগ ও জামায়াত নির্বাচনে যেতে রাজি হয়েছে, তখন বেগম খালেদা জিয়া হিমালয়ের মতো মাথা উঁচু করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, আগে এরশাদের পদত্যাগ তারপর নির্বাচন। কারণ স্বৈরাচারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। স্বৈরাচার যেকোনো গলি দিয়ে ঢুকে আবার গণতন্ত্রের ঘাড় মটকে দিতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসবের জন্য খালেদা জিয়া ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কি কষ্ট সহ্য করতে হয়নি? ৯ বছরে সাতবার গৃহবন্দি হয়েছেন বেগম জিয়া। আর একাত্তরের কথা তো সবাই জানেন। সেদিনও তিনি শিশুসন্তানদের নিয়ে বন্দি ছিলেন। নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্যেও প্রতিশ্রুতি থেকে তিনি কোনো দিন বিচ্যুত হননি। এ জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজও মহীয়ান।
আজ তার সন্তান সেই পতাকাকে ধারণ করে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে বিএনপির নেতৃত্বে ফাটল ধরানোর। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এটাই আমাদের প্রেরণা। এ সময় বিএনপিতে তারেক রহমানের নেতৃত্ব অপরিহার্য বলেও উল্লেখ করেন এ নেতা।
আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।