ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আজ থেকে আবাসিক হল খুলে দেয়া হলেও ছেলেদের দুটি হলে গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল এবং বিজয় একাত্তর হলে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়, আগে গণরুমে ছিলেন এমন শিক্ষার্থীরা হলের সামনে জড়ো হয়ে বসে আছে। টিকা কার্ড প্রদর্শন শর্তেও তাদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এসব ফালতু সিদ্ধান্ত। লোকদেখানো পদক্ষেপ। আমাদের হলে তুলবে না, বিষয়টি আগে জানিয়ে দিলেই পারত। আমরা আসতাম না। এখন আমরা থাকব কোথায়?
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়েছে আজকে সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবে। শুধু গণরুমের শিক্ষার্থীদের তোলা হবে, সে বিষয় আগেই জানিয়ে দিত। প্রাধ্যক্ষদের তো জানা আছে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা গণরুমে থাকে।’
একই হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গণরুমে না রাখলে অছাত্রদের সিটে আমাদের আগেই সিট বরাদ্দ দিত। তাহলে এখন আর ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।’
বিজয় একাত্তর হলের সামনে অপেক্ষারত প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা সকাল ৮টা থেকে হলের গেটে বসে আছি। টিকা কার্ড থাকা সত্ত্বেও আমাদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এখন ছাত্রলীগের বড় ভাইরা কী বলে সেটি দেখি।’
একই হলে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলে ওঠার জন্য সকাল থেকে হলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আগে গণরুমে থাকতাম, তাই আমাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। প্রভোস্টকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘হলে আর কোনো গণরুম নেই। তোমরা ১৭ তারিখ আসো। এর মধ্যে তোমাদের জন্য আমরা সিট বরাদ্দ দিতে পারব।’
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘চলতি মাসের ১৭ তারিখ থেকে আমাদের সশরীরে বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা। এত দিন কোথায় থাকব, স্যারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘রিকশা ভাড়া দিচ্ছি। এটা দিয়ে বাসায় চলে যাও।’
তার বাড়ি কক্সবাজারে বললে প্রভোস্ট নিরুপায় হয়ে ওই শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘আমাদের কী করার আছে, তুমিই বলো।’
গণরুমের শিক্ষার্থীদের হলে না তোলার বিষয়ে এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা হলে কোনো গণরুম রাখব না। তাই তাদের তুলতে পারছি না। সিট বরাদ্দ দিয়ে কয়েক দিন পর তাদের তোলা হবে।’
বিষয়টি তাদের আগে জানানো হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীরা তো আমাদের জিজ্ঞাসা করে এত দিন হলে থাকেনি। যেসব নেতাকে বলে তারা হলে এসেছে, এখন তাদের কাছে যাক।’
বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ‘ অনাবাসিক ওই শিক্ষার্থীদের ১৭ তারিখের আগে রুম বরাদ্দ দিয়ে হলে তোলা হবে। তা ছাড়া তারা আমাদের আবাসিক শিক্ষার্থী না যে তাদের আমরা আগে থেকে ইনফর্ম করতে পারব।’
হলে ওঠার বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেয়া থাকলে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবে।’