স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের পর এবার সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তোলা শুরু করেছে তুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
রোববার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলে ওঠা শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের ফুল, চকলেট, মাস্ক দিয়ে বরণ করে হল কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন পর হলে উঠতে পেরে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে। হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেরি করে নেয়ার কারণে কেউ কেউ ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের সঙ্গে ৫ অক্টোকরই কেন সবাইকে হলে তোলা হয়নি এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্যার এ এফ রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেকদিন পর আজকে হলে উঠতে পারছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ৫ অক্টোবর তারা সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের উঠতে দিলে কী সমস্যা হতো আমরা বুঝতে পারছি না।’
বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের অনেক শিক্ষার্থীরা ৫ তারিখই হলে উঠে গেছে। এটা আটকাতে না পেরেই বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়ে ১০ তারিখ সবার জন্য হল খুলার তারিখ নির্ধারণ করেছে। যেসব সিদ্ধান্ত মানা যাবে না সেসব সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় না নিলেই ভালো।’
এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত নেয়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী অন্তত করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের সবাইকে হলে ওঠার অনুমতি দেয়া হবে।
হলে ওঠার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুসরণ করে টিকা নেয়ার কার্ড/সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকে দেখাতে হবে।
৫ অক্টোবর শুধু চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার অনুমতি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার।
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয় হলও।
হলের ওঠার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে শিক্ষার্থীদের কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আগেই। নির্দেশনাগুলো হলো:
# কক্ষের বাইরে গেলে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক সঠিক নিয়মে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে।
# স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাতধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
# স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
# কোনো কক্ষের মেঝেতে শোয়া যাবে না। এক বিছানায় একাধিক ব্যক্তি শোয়া যাবে না। কেবল আবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবে।
# কোনো বহিরাগত বা বাহির থেকে আসা কাউকে কক্ষে অবস্থান করতে দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে কক্ষে ও কক্ষের বাহিরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
# শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ রুম এবং আশপাশ সবসময় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে হল প্রশাসন সহযোগিতা করবে।
# হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, টিভি রুম, অডিটোরিয়াম, অতিথি কক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপাসনালয়ে ভিড় করা যাবে না। এসব স্থানে সামাজিক দূরত্ব মেনে মাস্ক পরতে হবে।
# ডাইনিংয়ে পালাক্রমে খেতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অতিথিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বন্ধ থাকবে।
# বেড়ানো ও ঘোরাঘুরি থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সভা-সমাবেশ, রেস্তোরাঁ, পার্টি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে।