খুলনা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষার প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ১৫ দিনেও খোঁজ মেলেনি অভিযুক্ত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাসের।
অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই হাসপাতালে বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষার নামে প্রায় ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে এ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন রয়েছে।অন্যদিকে সন্ধান না মেলায় উদ্বিগ্ন প্রকাশের পরিবারও। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারাও এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টির তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছেন।সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাস নমুনা পরীক্ষার ফি নেয়ার দায়িত্বে ছিলেন। তবে তিনি ১৩ মাস ধরে প্রতিদিন যতজনের করোনা পরীক্ষা করাতেন, তার চেয়ে কমসংখ্যক মানুষের নাম খাতায় লিখে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সিভিল সার্জন জানান, এ সময় প্রকাশ দাস নমুনা পরীক্ষার ফি নেয়ার যে তালিকা দিতেন ওই অনুযায়ী ক্যাশিয়ার টাকা বুঝে নিতেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে এ বিষয়ে ২২ আগস্ট তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। এতে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।
তিনি জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর ওই হিসাব দেয়ার কথা ছিল। তবে ওই দিন দুপুরে অফিসে বসে হিসাব করার একপর্যায়ে তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে অফিস থেকে চলে যান। এরপর থেকে তার আর সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি ও দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে অভিযোগ দেয়া হয়।
প্রকাশ কুমারের স্বজনরা জানান, ২০১০ সালে প্রকাশ কুমার দাস খুলনা জেনারেল হাসপাতালে মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট ও তার স্ত্রী মাধবী লতা শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে চাকরি পান। চাকরির শুরুতে আয় ভালো না হওয়ায় তিনি প্রথমে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ব্যবসা শুরু করেন। এতে লোকসানে পড়লে একপর্যায়ে জমি বন্ধক রেখে গাড়ির শোরুম দেন। তার দুই কন্যা রয়েছে।প্রকাশ কুমার দাসের স্ত্রী মাধবী লতা দাস জানান, তার স্বামীর কোনো সন্ধান না পেয়ে দুই মেয়ে নিয়ে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। দোষী হলে তিনিও তার স্বামীর সাজা চান।দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি বিভাগীয় দপ্তরের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি মিললে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে থানায় মামলা করার সুযোগ নেই। কমিশন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।’