একুশে ও স্বাধীনতা পদকে ভূষিত পদার্থবিজ্ঞানী ড. এ এম হারুন-অর-রশীদ মারা গেছেন।বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এই শিক্ষকের বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিকেলে অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদের জানাজা হয়। এরপর মরদেহ মিরপুরে নেয়া হয় দাফনের জন্য।
ড. এ এম হারুন-অর-রশীদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
শোকবাণীতে তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ড. এ এম হারুন অর-রশীদ ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পদার্থবিদ। তিনি ছিলেন আদর্শবান, দেশপ্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধসম্পন্ন একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও গবেষক।
‘এই গুণী শিক্ষকের অসংখ্য গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষা প্রসার ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন হারুন-অর-রশীদ। এরপর পিএইচডি ডিগ্রি নেন যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি থেকে।
১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোস সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক হারুন একমাত্র বাংলাদেশি যিনি পরপর তিনবার নোবেল পুরস্কার মনোনয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সরকার ১৯৯১ সালে তাকে একুশে পদক এবং ২০০৯ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে।বিজ্ঞান বিষয়ে লেখা অধ্যাপক হারুনের বইগুলো দেশে বিজ্ঞানচর্চায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ওপর ইংরেজি ও বাংলায় ৫০টির বেশি বই লিখেছেন।
কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্য, বাংলা একাডেমির নির্বাহী কাউন্সিল, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সরকারের ন্যাশনাল কারিকুলাম কমিটি ও এক্সামিনেশন রিফর্মস কমিটি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।