দরজায় কড়া নাড়ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সোমবার ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। পূজা উপলক্ষে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে জাতীয় মন্দির রাজধানীর ঢাকেশ্বরীতে।
করোনা মহামারির কারণে গতবারের মতো এবারও সীমিত পরিসরে আয়োজিত হবে পূজা। এ উপলক্ষে মন্দিরে বসবে না কোনো মেলা। থাকবে না আরতি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনও।
শনিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরের আশপাশে পরিষ্কার-পরিছন্নতা ও মন্দির প্রাঙ্গণে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে গড়া হয়েছে প্রতিমা। চলছে রং করার কাজ।
দুর্গা দেবীকে বরণে চারদিকে এখন সাজসাজ রব।
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুযায়ী, বছর ঘুরে ‘উমা’ দেবী হিমালয়ের কৈলাশ থেকে ভক্তকে দর্শন ও তাদের পূজা নিতে ফের আসছেন মর্ত্যে। চণ্ডীপাঠ, ঢাকের বোল, শঙ্খের শব্দ আর উলুধ্বনিতে আমন্ত্রিত হবেন দেবী দুর্গা।
প্রতিবছর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে প্যান্ডেল লাগানো, চেয়ার সরবরাহ, এবং মঞ্চের কাজ করে আরজু ডেকারেটর। এবারও তারা এসব কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন।
ডেকোরেটরের মালিক জীবন জানান, ১৫ দিন আগে থেকে তারা প্যান্ডেলিংয়ের কাজ শুরু করেছেন। আজকের মধ্যেই প্যান্ডেল লাগানোর কাজ শেষ হয়ে যেতে পারে। এরপর কাল থেকে মাঠের কাজ অর্থাৎ মঞ্চ বানানো, মাঠে বাঁশের বেড়া দেয়া ও চেয়ার বসানোর কাজ শুরু হবে৷ পূজা শুরুর আগেই কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশা জীবনের।
গত দুই বছর ধরে পূজা মণ্ডপে স্পন্সর করছে ইস্পাহানি মির্জাপুর। এবছরও স্পন্সর করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মন্দির প্রাঙ্গণে ইস্পাহানির তিনটি দোকান এবং আগে থেকে থাকা পাঁচটি দোকান ছাড়া আর কোনো দোকান বসছে না।
মন্দিরের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি শেষের দিকে। ষষ্ঠী বোধনের আগেই প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে। এবার মেলা বসবে না। তবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কয়েকটি দোকান থাকবে। পূজাতে আরতি থাকবে। তবে আরতি প্রতিযোগিতা হবে না। সাংস্কৃতিক আয়োজনও থাকছে না।’
পঞ্জিকা অনুযায়ী, সোমবার দুর্গা দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠিবিহিত পূজা, মঙ্গলবার মহাসপ্তমীবিহিত পূজা, বুধবার মহাষ্টমীবিহিত পূজা, বৃহস্পতিবার মহানবমীবিহিত পূজা এবং শুক্রবার দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও প্রতিমা বিসর্জন হবে।
পূজা উদযাপন পরিষদের হিসেবে এবার সারাদেশে প্রায় ৩২ হাজার পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগরে পূজা হবে ২৩৮টি মণ্ডপে।