শরৎকাল মানেই বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের সময়। এ সময়ে অনুষ্ঠিত হয় সনাতন বাঙালিদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
দেবী দুর্গার কথা বললেই চোখে ভাসে অসুরের বুকে ত্রিশূল ধরা শাড়ি পরা এক মৃন্ময়ী প্রতিমার রূপ। তবে সেই মৃন্ময়ীকে খাগড়াছড়ির লতিবান ইউনিয়নে কুড়াদিয়াছড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মণ্ডপে আট বছর ধরে সাজানো হচ্ছে থামিতে।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাকটিতে এবারও দেবী দুর্গাকে সাজিয়েছেন স্থানীয় ত্রিপুরা মৃৎশিল্পীরা।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৪ সাল থেকে ত্রিপুরাদের নিজস্ব পোশাক থামি পরিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করা হচ্ছে। এ কারণেই স্থানীয় এলাকাবাসী এবং জেলার অন্যদের কাছে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রস্থল এ মণ্ডপ।
কুড়াদিয়াছড়া সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি কিরণ লাল ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ আট বছর ধরে আমাদের নিজস্ব (ত্রিপুরা) পোশাক সজ্জিত করে মা দুর্গার পূজা উদ্যাপন করছি। মাকে এই পোশাকে সাজানোর উদ্যোগটি হাতে নেন কমিটির সাবেক সভাপতি সুবেন্দ্র ত্রিপুরা। উনার এই উদ্যোগটি আজও চলমান রেখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পূজা মণ্ডপের প্রত্যেক দেব-দেবী খাদি-থামিতে সজ্জিত। এখানে দেবী দুর্গা, মহিষাসুর, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও শনি দেবসহ সকলের পোশাক হিসেবেই থামি ব্যবহার করা হয়।
‘এই ভিন্নধর্মী সজ্জার কারণে দেবীকে একপলক দেখার জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্তদের আগমন ঘটে এই মণ্ডপে।’
তিনি জানান, ভিন্নধর্মী এ মণ্ডপের জন্য প্রতি বছর ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। পূজা উদযাপন সফল করতে তিনি সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন ত্রিপুরা বলেন, ‘আমাদের পূজা মণ্ডপের সব কাজ প্রায় শেষ। মণ্ডপ সজ্জার পর আগামী ১১ অক্টোবর থেকে সবার জন্য মন্দির উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পূজা আয়োজন করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সব প্রস্তুতি নিয়েছি। পূজার আগে উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ নিয়েছি। মণ্ডপের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কমিটির উদ্যোগে আমরা একটি স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করেছি। আশা করছি এ বছর দুর্গাপূজার উদ্যাপন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব।’