ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার পর চারটি কোম্পানির শেয়ার দর ক্রমাগত বাড়তে থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের এসএমই বোর্ডে সেটা হচ্ছে না।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হওয়া এসএমই বোর্ডে কোম্পানির সংখ্যা মোট ছয়টি। এর মধ্যে ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানি চারটি। বাকি দুটি নতুন তালিকাভুক্ত।
এই ছয়টি কোম্পানির মধ্যে প্রথম দিন একটির লেনদেন হয়নি। বাকি পাঁচটির সবগুলোর দর ১৮ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ে।
সেদিন যে কোম্পানির লেনদেন হয়নি, সেটির দামও পরে ২০ শতাংশ বাড়ে।
তবে পরে দুটি কোম্পানির শেয়ার দর অনেকটাই কমে যায়। একটি দর ধরে রাখে আর একটির দর সেদিনের তুলনায় বাড়ে।
ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যায় মূল মার্কেটে। গত ১৩ জুন ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরা চার কোম্পানির দর বাড়ে ১০ শতাংশ করে। এরপর টানা বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে দুটির দর ১৫ গুণের বেশি, একটির দর প্রায় চার গুণ, একটির দর পাঁচ গুণের মতো হয়ে যায়।
পরে এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির তদন্ত শুরু হওয়ার পর সেখান থেকে ব্যাপক দরপতন ঘটে। এতে বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
এর আগেও দুটি কোম্পানি ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরার পর একই ধরনের ঘটনা ঘটে। বাধাহীন গতিতে শেয়ার দর বাড়তে বাড়তে আকাশচুম্বী হয়ে যায়। পরে পড়তে পড়তে ক্ষতির মুখে পড়েন শেয়ারধারীরা।
মূল মার্কেটে এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বাড়ার সুযোগ থাকলেও এসএমই বোর্ডে দর বৃদ্ধি বা হ্রাসের সার্কিট ব্রেকার ২০ শতাংশ। এ কারণে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে যাদের মনে ধারণা ছিল যে, সেখানে শেয়ারের দর আরও বেশি গতিতে বাড়বে, সেটি ভুল প্রমাণ হয়ে গেছে এরই মধ্যে।
কেবল ওটিসি মার্কেট নয়, নতুন তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানির শেয়ার দরও বাড়েনি এসএমই বোর্ডে। অথচ মূল মার্কেটে কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলেও শেয়ার দর দ্বিগুণ, তিন গুণ, চার গুণ এমনকি আট গুণ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে।
এসএমই বোর্ডে যারা শেয়ার কিনতে পারেন, তারা হয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে, এমন বিনিয়োগকারী।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় বিনিয়োগারীদের সঙ্গে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিশ্লেষণ আর হিসাব-নিকাশের পার্থক্য এখানেই। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাচাই-বাছাই ছাড়াই শেয়ার কিনে থাকেন। যেগুলোর দাম বাড়ছে, সেগুলোর শেয়ার বেশি কেনেন। আর তাদের এই প্রবণতার সুযোগ নিয়ে চতুর বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের দর কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু সেটি এসএমই বোর্ডে ঘটছে না।
যে দুটি কোম্পানি এসএমই বোর্ডে নতুন তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর একটির দর ছয় কর্মদিবসে বেড়েছে ৩০ শতাংশ, একটির ৩৫ শতাংশ।
অথচ মূল মার্কেটে দেখা গেছে, নতুন তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তিন থেকে সাত গুণ হতে সময় লাগেনি মোটেও। সম্প্রতি এক দিনে নতুন শেয়ারও সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে বলে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেও দ্বিগুণের বেশি হওয়ার আগ পর্যন্ত সাউথবাংলা ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়নি বললেই চলে।
আর সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর প্রায় প্রতিদিনই ১০ শতাংশ বাড়তে বাড়তে পরে লভ্যাংশ ঘোষণার পর মূল্যসীমা না থাকার দিন এক দিনে বেড়ে অভিহিত মূল্যের ৮ গুণ ছাড়িয়ে যায়।
এসএমই বোর্ড চালুর পর এখন পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে ছয় দিন। এর মধ্যে প্রথম দিন বাড়লেও পরে একটি কোম্পানির দর প্রথম দিনের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমে যায়।
একটি যত টাকায় ওটিসি থেকে ফিরেছিল, সেখান থেকে ১০ শতাংশ কমে গেছে, যদিও প্রথম দিন বেড়ে গিয়েছিল ২০ শতাংশ।
কেবল একটি কোম্পানির শেয়ার দর ওটিসি থেকে ফেরার দিনের দামের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এসএমই প্ল্যাটফর্মে লেনদেনে অংশগ্রহণ করছে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তারা সব জেনে-বুঝে শেয়ার কেনাবেচা করে। ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে নিয়ে গেলেই দাম বাড়বে, কেবল শেয়ার সংখ্যা কম বলেই দাম বাড়বে- এমন হিসাব-নিকাশ তারা করে না।’
তিনি বলেন, ‘মূল মার্কেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে। তাদের একটি বড় অংশ গুজবে কান দেয়। মূল মার্কেটে আসার ফলে কোম্পানি ভালো হবে, এমন কথা ছড়ানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এর কিছুই হয় না।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগ শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ওটিসি মার্কেট থেকে ফিরলেই সেই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়বে, সেটি ঠিক নয়। বরং কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল অনুযায়ী শেয়ার দর নির্ধারিত হবে, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। এসএমই বোর্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার উচিত।’
ওটিসি থেকে ফেরা এসএমই চার কোম্পানি
বেঙ্গল বিস্কুট
এই কোম্পানিটি ফেরার দিন সবচেয়ে বেশি দাম নিয়ে এসেছে। ওটিসিতে শেষ লেনদেন হয়েছিল ১৮০ টাকায়।
লেনদেনের প্রথম দিন দাম বেড়ে হয়ে যায় ২১৩ টাকা ৩০ পয়সা। পরে সর্বোচ্চ ২৫২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ কর্মদিবসে সেখান থেকে দাম কমে দাঁড়ায় ১২০ টাকায়।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এই কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৭৯ লাখ ৩৮ হাজার। এর মধ্যে আবার ৩০ দশমিক ৬০ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে, যা বিক্রি করা যাবে না। ফলে বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ার সংখ্যা খুবই কম।
বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ৫২ লাখ ৭০ হাজার ৮৩২টি।
ওয়ান্ডারল্যান্ড টয়েজ
একমাত্র এই কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রথম দিনের দরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
এই কোম্পানিটি লেনদেন শুরু করে ১৬ টাকা ৬০ পয়সায়। প্রথম দিনে দিনের সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়ে হয় ১৯ টাকা ৯০ পয়সা। পরে আরও কয়েক দিন বেড়ে সর্বোচ্চ দর হয়েছে ৩৪ টাকা ২০ পয়সা।
তবে বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪ দশমিক ৪৮ শতাশ কমে ২৯ টাকা থেকে হয়েছে ২৭ টাকা ৭০ পয়সা।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। যা এই মুহূর্তে বিক্রিতে আছে বিধিনিষেধ। ফলে বাজারে বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ৫৩ লাখের কিছু কম।
অ্যাপেক্স ওয়েভিং
বস্ত্র খাতের এই কোম্পানিটি এসএমই বোর্ডে আসে ১২ টাকা দর নিয়ে। প্রথম দিনই সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৪০ পয়সা। এই দরে সেদিন হাতবদল হয়েছিল ৫টি শেয়ার। পরে সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা।
তবে গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর কমে হয়েছে ৯ টাকা। অর্থাৎ যে দর নিয়ে ওটিসি থেকে এসেছিল, এখন কমে গেছে তার চেয়ে বেশি।
হিমদ্রি
এই কোম্পানিটি এসেছে ৮ টাকা দর নিয়ে। প্রথম দিন লেনদেনই হয়নি। পরে এক দিন ২০ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৬০ পয়সা হয়।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৭৫ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৭ লাখ ৫০ হাজার। তবে বাজারে বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের পরিমাণ খুবই কম।
কারণ, মোট শেয়ারের ৯৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ আছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। সরকারের শেয়ার আছে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ আছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, অর্থাৎ ৬৭৫টি। এখানে হতে পারে, এই শেয়ারের মালিকরা কেউ বিক্রি করতে রাজি নন।
বিবিধ খাতের এই কোম্পানিটির রিজার্ভে জমা আছে ১৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১ হাজার ৮০৫ টাকা।
নতুন তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির যে চিত্র
নতুন তালিকাভুক্ত হয়ে এসএমই বোর্ডে নাম লিখিয়েছে অরিজা অ্যাগ্রো ও মাস্টার ফিড।
এর মধ্যে অরিজার শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৫০০। এর মধ্যে ৪৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬৪ হাাজর ১৬টি শেয়ার সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে আছে।
প্রথম দিন এই কোম্পানির শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের ২০ শতাংশ বেড়ে হয় ১২ টাকা। পরে দাম বাড়তে বাড়তে সর্বোচ্চ দর দাঁড়ায় ২০ টাকা ৬০ পয়সা। তবে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকায়।
কোম্পানিটিও প্রাতিষ্ঠানিক বা যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ০২ পয়সা।
মাস্টার ফিড অ্যাগ্রোটেকের শেয়ার দরও বেড়ে গিয়ে একইভাবে কমেছে। এটিও ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে প্রথম দিনই শেয়ার দর হয়ে যায় ১২ টাকা। এটিরও সর্বোচ্চ দর ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। আর বৃহস্পতিবারের দর ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা।
কোম্পানিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৮ পয়সা।
এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৬ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৫০০। এর মধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখ ২ হাজার ৯৫টি আছে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে।
মূল মার্কেটে ওটিসি ফেরা কোম্পানির উল্টো চিত্র
ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তর না করা, লোকসানসহ নানা অনিয়মের কারণে চার কোম্পানিকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওটিসিতে পাঠানো হয়। সুশাসনের দিক থেকে উন্নতি ও মুনাফায় ফেরার কারণে গত ১৩ জুন সেখান থেকে মূল মার্কেটে আনা হয় কোম্পানিগুলোকে।
এই স্থানান্তরের পর থেকে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর।
তবে দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্তের ঘোষণা আর দুটি কোম্পানির আগের শতভাগের বেশি বোনাস শেয়ার যুক্ত হওয়ার পর শেয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার খবরে ক্রমেই কমছে।
মূল মার্কেটে ফেরার দিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর ছিল ১৩ টাকা। এ সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২০২ টাকা। অর্থাৎ শুরুর দিনের তুলনায় দাম এখন প্রায় ১৫ গুণ।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৮ টাকা ৪০ পয়সা। ফরে সর্বোচ্চ দরে যারা শেয়ার কিনেছেন, তাদের এখন শেয়ারপ্রতি লোকসান ৬৩ টাকা ৬০ পয়সা।
৩০ কোটি টাকার কিছু বেশি পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৬৪ হাজার ৭৬৭। এর মধ্যে ৫৬ দশমিক ২২ শতাংশ ধারণ করে আছেন উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। ফলে বাজারে লেনদেনযোগ্য শেয়ারের সংখ্যা ১ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৫টি।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেড়েছে পেপার প্রসেসিংয়ের। এই কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফিরেছে ১৬ টাকায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২৪৭ টাকা। অর্থাৎ দাম বাড়ে ১৫ গুণের বেশি।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।
মূল মার্কেটে ফেরার সময় কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন দেখানো হয় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার।
তবে মূল মার্কেটে ফেরার আগে ২০০ শতাংশ বোনাস যোগ করে ২০ সেপ্টেম্বর রোববার মূলধন দেখানো হয় ১০ কোটি ৪৫ লাখ। শেয়ার সংখ্যা বেড়ে হয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার।
এরপর থেকে টানা কমছে শেয়ার দর। বৃহস্পতিবার দাম দাঁড়িয়েছে ১৫৬ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ দাম ৯০ টাকার বেশি কমেছে।
৫০ টাকা নিয়ে ফেরা মনোস্পুল পেপারের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২৪৯ টাকা ৮০ পয়সা। এখন লেনদেন হচ্ছে ১৬০ টাকা ৪০ পয়সা।
এই কোম্পানিটির ক্ষেত্রেও পরিশোধিত মূলধন হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর দরপতন ঘটতে থাকে।
এই কোম্পানিটিও মূল মার্কেটে ফেরার আগে ঘোষণা করা লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটে।
এই কোম্পানিটি মূল মার্কেটে ফেরার সময় পরিশোধিত মূলধন দেখানো হয় ৩ কোটি ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৩২০টি।
কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বর মূলধন উল্লেখ করা হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা দেখানো হয় ৯৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫টি।
কোম্পানি দুটির সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুটি কোম্পানিই ২০১৮ সালে ২০০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বিএসইসির নির্দেশনা অনুসারে, তাদের অনুমোদন ছাড়া ওটিসির কোনো কোম্পানির বোনাসের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যায় না। তাই মূল মার্কেটে ফেরার সময় ওই বোনাসের আলোকে শেয়ার সংখ্যা দেখানো যায়নি। সম্প্রতি বিএসইসি তাদের বোনাস অনুমোদন করায় এ তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে।
এই তিনটি কোম্পানির তুলনায় মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার সংখ্যা বেশি। আর এটির দামও বেড়েছে তুলনামূলক কম।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৫ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ফেরার দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১০ টাকা। প্রায় প্রতিদিন ১০ শতাংশ করে বাড়তে বাড়তে ৩০ জুন ৩৭ টাকা ২০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু পরে কমতে কমতে এখন দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৬০ পয়সায়।