জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং নাট্যকার ড. আফসার আহমদ আর নেই।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে শনিবার তার মৃত্যু হয়।
অধ্যাপকের জামাতা হিমেল মাহবুব নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বেলা পৌনে তিনটার দিকে জানান, তার শ্বশুরের মরদেহ বর্তমানে আল-মারকাজুল ইসলামীতে আছে। সেখানে গোসল করিয়ে তার মরদেহ নেয়া হবে কর্মস্থল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সাবেক শিক্ষার্থী কমলেশ রায়ের বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে খুলনায় গিয়েছিলেন আফসার আহমদ। শুক্রবার কমলেশের বিয়ের আশীর্বাদে অংশ নেন তিনি।
শিক্ষার্থী কমলেশের বিয়ের আশীর্বাদে অধ্যাপক আফসার। ছবি: সংগৃহীত
আফসার আহমদের সাবেক এক শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে জানান, শনিবার সকালে খুলনা থেকে যশোর গিয়ে সাড়ে ১০টার ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন এ অধ্যাপক। বিমানেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়। ঢাকায় আনার পর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মহিবুর রৌফ শৈবাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে মরদেহ নেওয়া হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ রাখা হবে পুরাতন কলাভবনের সামনে। এরপর জানাজা ও দাফনের সিদ্ধান্ত হবে।’
ডিবিসির সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, এশার নামাজের পর আফসারের জানাজা হবে। আগামীকাল মানিকগঞ্জের জামশায় তার দাফন হবে।
আফসার আহমদের বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামে ১৯৫৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তার।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন আফসার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ‘মধ্যযুগের বাংলা আখ্যান কাব্যের আলোকে বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠী নাট্য’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয়।
আফসার আহমদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রোত্তর কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার ড. সেলিম আল দীনের সঙ্গে ১৯৮৬-৮৭ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষকতায় ছিলেন। তিনি বিভাগের সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন, প্রক্টর, সিনেট-সিন্ডিকেটের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. আফসার একাধারে কবি, নাট্যকার, অনুবাদক, গবেষক ও সাহিত্য সমালোচক ছিলেন।