বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কক্সবাজারের আকাশে চক্কর কাটে জামশেদের ড্রোন

  •    
  • ৯ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:৩৪

জামশেদের তৈরি জয় বাংলা ড্রোনের ওজন ১২০০ গ্রাম। এটি অতিরিক্ত আরও ৮০০ গ্রাম ভর নিয়ে কয়েক শ ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে। প্রথম ১০ সেকেন্ডেই ড্রোনটি ১০০ ফুট ওপরে উঠতে সক্ষম। প্রতিবার উড্ডয়নে ১০ মিনিট আকাশে থাকতে পারে এটি।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদ নগরের ‘ক্ষুদে বিজ্ঞানী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন আব্দুল মান্নান জামশেদ। ‘বিজ্ঞানী’ বিশেষণ অবশ্য এলাকাবাসীর দেয়া তকমা।

কারণ, জামশেদ নিজেই তৈরি করেছেন ড্রোন, যা চক্কর কাটে কক্সবাজারের আকাশে।

আবদুল মান্নান জামশেদ উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের পানির ছড়া গ্যারেজ এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। তিনি কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র।

ছোটবেলা থেকে জামশেদের স্বপ্ন বিজ্ঞানী হওয়ার। সে স্বপ্নকে লালন করে টুকটাক নানা কাজ করতে থাকেন। পড়ালেখার সুবাদে তৈরি করেন নানা জিনিসপত্র।

করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশে বন্ধ করে দেয়া হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

জামশেদের ‘জয় বাংলা’ ড্রোন

এ সময় তিনি নিজের চেষ্টাতেই বানিয়েছেন ড্রোন, নাম দিয়েছেন ‘জয় বাংলা’। এরপর এলাকায় পড়ে যায় সাড়া। তার ড্রোন তৈরি ও ওড়ানোর খবর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার লোকজনও তার প্রতিভায় ব্যাপক খুশি।

জামশেদের সহপাঠী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘ও (জামশেদ) ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী। ইউটিউব দেখে সে বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন যন্ত্র তৈরি করত। এ জন্য এলাকায় তাকে বিজ্ঞানী নামে ডাকে। সে একটি ড্রোন বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। যা সত্যি রামুবাসীর জন্য গর্বের বিষয়।’

জামশেদের প্রতিবেশী মো. সাইদুজ্জামান বলেন, ‘জামশেদ সংগ্রাম করে পড়াশোনা করছে। বাবা চা বিক্রি করেন। সুযোগ হলেই অবসর সময়ে বাবাকে সাহায্য করত জামশেদ। সে আজ ড্রোন তৈরি করে সাড়া ফেলেছে।’

জামশেদ নিউজবাংলাকে জানান, তার কাজে বাবা-মা সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। কোনো কমতি রাখেননি। এমন সফলতার পেছনেও মূল ভূমিকা তার বাবা-মায়ের।

তিনি বলেন, ‘ড্রোন তৈরির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা খুব সহজ ছিল না। অনলাইন থেকে কিছু যন্ত্রপাতি কিনেছি। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর।’

বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেলে এর খরচ একেবারে কমে আসবে বলেও জানান জামশেদ।

প্রতিবার উড্ডয়নে ১০ মিনিট আকাশে থাকতে পারে জামশেদের ‘জয় বাংলা’ ড্রোন

ড্রোনটি কৃষিকাজে বিশেষ করে কীটনাশক ও সার প্রয়োগ, গহীণ বনে কারও অবস্থান শনাক্ত করাসহ বহুমুখী কাজে ব্যবহার করা যাবে।

জয় বাংলা ড্রোনের ওজন ১২০০ গ্রাম। এটি অতিরিক্ত আরও ৮০০ গ্রাম ভর নিয়ে কয়েক শ ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে। প্রথম ১০ সেকেন্ডেই ড্রোনটি ১০০ ফুট উপরে উঠতে সক্ষম। প্রতিবার উড্ডয়নে ১০ মিনিট আকাশে থাকতে পারে এটি।

জামশেদ বলেন, ‘আগেও ছোট ছোট ড্রোন বানিয়েছি। প্রতিটি বিজ্ঞান মেলায় গিয়ে অংশ নেই। এ সম্পর্কে নতুন কিছু প্রকাশের খোঁজ খবর নিই।

‘লক্ষ্যে পৌঁছাতে যত বাধাই আসুক, আমি তা পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব’ বলেন তিনি।

তার স্বপ্ন একদিন মহাকাশ বিজ্ঞানী হবেন। কাজ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন।

জামশেদের বাবা আমির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুব কষ্টে ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছি। নিজের চায়ের দোকান দিয়ে চলে সংসার। ড্রোন তৈরিতে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। তারপরও চাই, ও ভালো করুক।’

জামশেদের বাবার দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জামশেদ এমন আরও অনেক নতুন কিছু তৈরি করতে পারবে।

এ বিভাগের আরো খবর