বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পূজার কেনাকাটায় জমজমাট শাঁখারীবাজার

  •    
  • ৮ অক্টোবর, ২০২১ ২০:৫৬

অঞ্জলি রায় বলেন, ‘চন্দন কিনেছি, লেস কিনব আবার মালাও কিনব। তিলকচন্দন আর মালা মুকুট আছে, এসবই কেনা হবে। গতবার ভালোভাবে কেনাকাটা করতে পারিনি। ছেলেমেয়েদের জন্য কেনাকাটা করেছি। মোটামুটি কম দামেই জিনিসপত্র পেয়েছি।’

দরজায় কড়া নাড়ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। শাঁখারীবাজারের অলিগলিতে এখন ক্রেতা-বিক্রেতাদের তুমুল ভিড়।

শুক্রবার সকালে ও বিকেলে শাঁখারীবাজার গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমার সাজসজ্জা থেকে শুরু করে মুকুট, শাড়ি, অলংকার, লেস, সিঁদুর, ফুলের মালা, প্রতীকী অস্ত্র ও ঘট কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। পূজা-অর্চনার সব উপকরণই মেলে শাঁখারীবাজারে। এসব উপকরণ কিনতে অনেকে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এখানে।

পূজার জন্য প্রায় ১০০ উপকরণের প্রয়োজন হয়। শাঁখারীবাজার থেকেই এসব উপকরণ সংগ্রহ করা যায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাঁখারীবাজার থেকে এসব উপকরণ সংগ্রহ করেন।

পূজা উপলক্ষে ঢাকার আশপাশের বিক্রেতারাও বিভিন্ন জিনিস পাইকারি দরে কিনে নিচ্ছেন। এ ছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পুরো পরিবারসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে কেনাকাটা করছেন।

ক্রেতারা জানান, প্রতিমার সাজসজ্জা থেকে শুরু করে পূজার সব উপকরণই মেলে শাঁখারীবাজারে।

অঞ্জলি রায় নামে এক ক্রেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চন্দন কিনেছি, লেস কিনব আবার মালাও কিনব। তিলকচন্দন আর মালা মুকুট আছে, এসবই কেনা হবে। গতবার ভালোভাবে কেনাকাটা করতে পারিনি। ছেলেমেয়েদের জন্য কেনাকাটা করেছি। মোটামুটি কম দামেই জিনিসপত্র পেয়েছি।’

কেনাকেটা করতে ময়মনসিংহ থেকে এসেছেন বিধান চক্রবর্তী।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পূজার মুকুট, পূজার শাড়ি, পূজার গয়না, পূজার চুড়া, শাড়িসুড়ি এইগুলা কিনতেছি। আমরা মালাসহ পূজার যা যা লাগে সবই মোটামুটি কিনতেছি। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকেই আমি এখানে পূজার সামগ্রী কেনাকাটা করতে আসি।’

মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক নামে এক ক্রেতা জানান, দুর্গাপূজার আরাধনায় প্রায় ১০০ উপকরণ লাগে। এগুলো ছাড়া পুরোহিতরা পূজাই করতে চান না। তাই পূজার আগে সব উপকরণ গুছিয়ে রাখা আয়োজকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা

তিনি বলেন, ‘দুর্গাপূজা শুরু হয় মহাষষ্ঠীর কল্পারম্ভ দিয়ে। এরপর আসে বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। পরে শুরু হয় সপ্তমীর নবপত্রিকা স্নান ও মহাস্নান, অষ্টমী পূজা, সন্ধিপূজা, নবমী পূজা ও দশমী পূজা। প্রতিটা ধাপে ধাপে কিছু নতুন নতুন উপকরণ সংযোজন হয়। তাই দুর্গাপূজার ফর্দ এত বিশাল হয়ে থাকে।’

পূজা উপলক্ষে পোশাকের কেনাকাটা অনেকটাই শেষ। এখন অপেক্ষা দেবীর আগমনের। আর দেবীদুর্গাকে বরণে নতুন শাঁখা, সিঁদুর ও আলতা কিনতে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার ভিড় করছেন নারীরা। দশমীতে মায়ের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে সিঁদুর খেলায় মাতবেন ভক্তরা।

স্বামীর মঙ্গলের জন্য প্রথা অনুসারে সারা বছর শাঁখা পরেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা। তবে সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবে নতুনত্ব চায় সবাই।

বিক্রেতারা জানান, সোনা বাঁধানো ও ময়ূরের কারুকার্যখচিত চিকন শাঁখা বেশি চলছে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকে বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের শাঁখা আমদানি করা হয়েছে।

এ ছাড়া দুর্গোৎসবের জন্য বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মুখমণ্ডলের মতো মুখোশও বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরাও ব্যস্ত বেচাকেনায়। বছরের এই সময়ে বেশি বেচা হয় তাদের। তবে করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে আগের মতো আর বিক্রি হচ্ছে না।

শ্যামল ভান্ডারের দোকানের মালিক শ্যামল সুর বলেন, ‘পূজার অলংকার, পূজার মালা, পূজার সাজসজ্জা যা লাগে এবং পূজার পুরোহিতদের যা যা লাগে সবই আছে। দুই-তিন বছর তেমন কোনো বিক্রি হচ্ছে না। ২০১৭-১৮ সালে যেভাবে হয়েছিল, এখনও ওইভাবে হচ্ছে না। যার ১০০ টাকা বাজেট আছে, সে এখন ৬০ টাকা দিয়ে কিনতে চাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিমার কেনাকাটায় গয়না বিক্রি হয় সেট আকারে। প্রতি গয়নার সেট চার হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।’

গোপীনাথ স্টোরের ম্যানেজার আপন চক্রবর্তী জানান, পূজার যা যা লাগে সবই বিক্রি হচ্ছে। অন্য জেলা থেকে প্রচুর লোক এখানে আসে আর এবারও এসেছে। আর যারা স্থানীয় বা আশপাশের তারা তো আছেই।

তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার অবহেলা দেখা গেছে। এত মানুষের ভিড়েও অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক।

৬ অক্টোবর মহালয়া দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।

এ বিভাগের আরো খবর