বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনলাইন ঋণের নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৫

  •    
  • ৭ অক্টোবর, ২০২১ ২৩:৩৪

ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘গ্রেপ্তাররা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তিনটি প্রতিষ্ঠান ও চায়নার সার্ভার থেকে পরিচালিত অ্যাপসের মাধ্যমে সুদের ব্যবসার নামে প্রতারণা করে আসছিল। একই সঙ্গে গ্রাহকদের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।’

অ্যাপসভিত্তিক ডিজিটাল মাইক্রোফাইন্যান্সের নামে অবৈধ সুদের ব্যবসা চালানোর অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

এরা হলেন ইমানুয়্যাল অ্যাডওয়ার্ড গোমেজ, আরিফুজ্জামান, শাহিনুর আলম রাজীব, শুভ গোমেজ ও মো. আকরাম।

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ও বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর ধানমন্ডি, বনানী এবং মিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ল্যাপটপ ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তাররা সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তিনটি প্রতিষ্ঠান ও চায়নার সার্ভার থেকে পরিচালিত অ্যাপসের মাধ্যমে সুদের ব্যবসার নামে প্রতারণা করে আসছিল। একই সঙ্গে গ্রাহকদের গোপন ও ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি।’

হাফিজ আক্তার জানান, থান্ডার লাইট টেকনোলজি লিমিটেড, নিউ ভিশন ফিনটেক লিমিটেড ও বেসিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির নামে বাংলাদেশে তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিল চক্রটি।

তিনি জানান, ওই তিন প্রতিষ্ঠানের আওতায় Tkala–Personal Loans Online, Cashman, RapidCash-Quick Online eLoans App, AmarCash-Personal Loans Online, Cashkash-Fast Loans Online ও CashCash নামের অ্যাপসগুলোর মাধ্যমে জামানতবিহীন লোন দেয়ার নামে মাত্রা অতিরিক্ত সুদের কারবার শুরু করে তারা।

হাফিজ আক্তার জানান, অ্যাপসগুলোর সার্ভার চায়নাতে অবস্থিত এবং এগুলো মূলত চায়না থেকে পরিচালিত হয়। কিছু চাইনিজ নাগরিক বাংলাদেশি চক্রটির সহায়তায় অ্যাপসগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে এই সুদ কারবার চালিয়ে আসছিল।

তিনি বলেন, ‘জামানতবিহীন স্বল্প সুদে লোন দেয়ার কথা বলে চক্রটি বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাহকদের অনেক টাকা কেটে নিত এবং গ্রাহকদের উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে হতো।’

ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘চক্রটি স্বল্প সুদে জামানতবিহীন ঋণ দেয়ার নামে অ্যাপসগুলোর বিজ্ঞাপন ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিত। ওইসব চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতো তারা। অর্থ সংকটে থাকা স্বল্প আয়ের লোকজন বিজ্ঞাপনে দেখানো লিংকে ক্লিক করে বা গুগল স্টোর থেকে অ্যাপসগুলো ডাউনলোড করে নিজেদের ও পরিবারের অন্যদের ব্যক্তিগত গোপন তথ্য ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সব তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করত।’

তিনি বলেন, ‘রেজিস্ট্রশন হয়ে গেলে মাত্রাতিরিক্ত প্রসেসিং ফি নিয়ে এবং উচ্চ হারে সুদ নির্ধারণ করে তিন থেকে সাত দিনের জন্য তারা গ্রাহকদের ঋণ দিত। গ্রাহক তিন হাজার টাকার আবেদন করলে অনুমোদনের পর প্রসেসিং ফি বাবদ ৮১০ টাকা রেখে গ্রাহককে মাত্র ২ হাজার ১৯০ টাকা দিত।

‘সাত দিন শেষে গ্রাহককে পরিশোধ করতে হতো ৩ হাজার ১৮ টাকা। মেয়াদ শেষে অনাদায়ে দিন হিসাবে গ্রাহককে উচ্চহারে সুদ প্রদান করতে হয়। এছাড়াও অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ ১২০ টাকা, ডাটা অ্যানালাইসিস ফি ১৮০ টাকা, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ১৫ টাকা এবং সুদ বাবদ ৫ টাকা কেটে রাখার যুক্তি দেখায় তারা।’

হাফিজ আক্তার বলেন, ‘পরিমাণ যত বেশি হবে টাকা কেটে রাখার প্রবণতাও বেশি হবে। এ ঋণের টাকা গ্রাহককে বিকাশ অথবা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।’

চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের সব গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য সংরক্ষণ করছিল বলেও জানান ডিবি প্রধান।

তিনি বলেন, ‘আইনি অনুমোদন ছাড়া তারা গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করেছে। গ্রাহকরা অ্যাপসগুলো ইনস্টল করার সময় গ্রাহকের অজান্তে ক্যালেন্ডারের ইভেন্ট পড়া, গ্রাহকের মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও ধারন, মোবাইলের কন্টাক্টস পড়াসহ মোবাইলের লোকেশন নির্ণয়, ফোনের স্ট্যাটাস এবং তথ্য সংগ্রহ, ফোনে সংরক্ষিত মেসেজ পড়া ও পরিবর্তন করার অনুমতি নিয়ে নেয়। পরে এসব তথ্য ব্যবহার করে নানা ধরনের বেআইনি কাজ করা যায়।’

চক্রটির প্রতারণার শিকার হয়ে ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে যেকোনো অ্যাপস বা লিংকে ঢোকার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেন হাফিজ আক্তার।

যে কোনো অ্যাপস ইন্সটল করার পর অথবা কোনো লিংকে ঢোকার পর ব্যক্তিগত কোনো তথ্য দেয়ার আগে নিরাপত্তার বিষয়টি ভালোভাবে নিশ্চিত হতে হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর