দীর্ঘ ছুটির পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের সশরীরে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সব ইনস্টিটিউট ও বিভাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। এসময় তাদের ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পূর্ব ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন। নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোও ক্যাম্পাসে ঢোকে।
এদিন সকাল ও বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে প্রধান ফটকের সামনে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার তারিখ দিয়ে করোনার কারণে আবার বেশ কয়েকবার পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে চার সপ্তাহ পর তারিখ দিয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। করোনা বেড়ে গেলে সশরীরে না গিয়ে অনলাইনে নেয়ার প্রস্তুতি ছিল আমাদের। তবে করোনার প্রকোপ কম থাকায় আজ থেকে শিক্ষার্থীদের সশরীরে পরীক্ষা নেয়া শুরু হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইন্সটিটিউটে বিভিন্ন ব্যাচের পরীক্ষার তারিখ ছিল। এছাড়া কেরানীগঞ্জ কারাগারে দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। তবে মেডিক্যাল সেন্টারে দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার কথা থাকলেও বিকেল পর্যন্ত তারা কেউই পরীক্ষা দিতে আসেননি।
ক্যাম্পাস খুলে দেয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
দীর্ঘ ছুটির পর ক্যাম্পাস খুলে দেয়ায় উচ্ছ্বাস জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অনুপম মল্লিক আদিত্য বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অবশেষে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। অনেক দিন একটা আফসোস ছিল মনের মধ্যে যে, এতদিন ক্যাম্পাসে এসেছি এখনও একটা পরীক্ষাও দিতে পারলাম না। অবশেষে বন্ধু ভাইয়া আপুদের সঙ্গে দেখা হলো। আমরা সবাই খুব খুশি।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আরমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার জন্য চাকরির পরীক্ষা দিতে পারছি না। পরীক্ষা নেয়া শুরু করায় জবি প্রশাসনকে ধন্যবাদ। আশা করছি খুব দ্রুত ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে সবাই খুব ভালো পর্যায়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করবে।’
পরীক্ষার হল পরিদর্শনে যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। ছবি: নিউজবাংলা
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মীম আফরোজ রায় বলেন, ‘অনেক দিন পর ক্যাম্পাস খুলেছে। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেই ক্যাম্পাসে আসা। আমরা আবার আগের ক্যাম্পাস ফিরে পেতে চাই।’
৭ সেপ্টেম্বর এক জরুরি সভায় ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়া গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে করোনায় আটকে থাকা অনার্স ও মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।