করোনার টিকা কেনায় এখন পর্যন্ত সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে পুলিশের আধুনিক মাদক নিরাময় কেন্দ্র ওয়েসিস উদ্বোধনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
করোনা মহামারি থেকে মুক্তি দিতে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে চায় সরকার। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোরালোভাবে কাজ করছে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনা থেকে জনগণের সুরক্ষায় টিকা ক্রয়ে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যদি আরও টাকা লাগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই টাকার ব্যবস্থা করবেন। তিনি চান দেশের মানুষ সুরক্ষিত থাকুক।’
ইতোমধ্যে সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে দুই কোটি মানুষকে।
তিনি বলেন, টিকার যোগান নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, প্রথম পর্যায়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে কোভ্যাক্সের আওতায় দেশের ২০ ভাগ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন পাঠানো হবে। পরে আমরা দেশের ৪০ শতাংশ জনগণের জন্য টিকা পাঠানোর অনুরোধ জানাই। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক পর্যায়ক্রমে তা পাঠাতে রাজি হয়েছেন।’
তারা আরও জানান, বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে যেসব টেকনিক্যাল সাপোর্ট লাগবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তা দিতে সম্মতি জানিয়েছে। এমনকি উৎপাদনে যে কাঁচামাল লাগে সেটাও দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে করোনা টিকার আরও বড় ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। যেমনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে করা হয়েছিল। এ দিন ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। এটা পৃথিবীর কোন দেশ একদিনে এখন পর্যন্ত দিতে পারে নাই। আগামী স্বাধীনতা দিবসে এর চেয়ে বড় টিকাদান কর্মসুচি হাতে নিতে চায় সরকার।
টিকা নিলে করোনা হলেও মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যায় জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিলে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয় তাও তার মৃত্যুর শঙ্কা খুব কম থাকে। তাই সবাইকে টিকা নিতে হবে।
দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে না এলে দেশের কোন কিছুই নিয়ন্ত্রণে আসে না। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো থাকে না। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। চলাচল সচল থাকে না। দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রাখতে হবে।’
এসময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে পুলিশ হাসপাতালে একটি ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনের প্রস্তাবনা দিলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি আমি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিয়ে জানাব।
‘যারা মানুষের জন্য কাজ করে। যারা মানুষের জন্য জীবন দেয়। আমরা তাদের জন্য এতোটুকু করতে পারব না। অবশ্যই আমরা পুলিশ হাসপাতালে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনের ব্যবস্থা করব।’