দীর্ঘদিন বাঁশের সাঁকোই ছিল চট্টগ্রামের পটিয়ার শ্রীমতী খালের দুপাড়ের বাসিন্দাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা। সরকারি অর্থায়ন না পেয়ে নিজেরাই টাকা তুলে খালের ওপর ১১১ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ৫ ফুট চওড়া সেতু বানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর জন্য খরচ হয়েছে ১৭ লাখেরও বেশি টাকা।
উপজেলার ১৪ নম্বর ভাটিখাইন ইউনিয়নে ভাটিখাইন-করল গ্রামের মাঝখানে বয়ে গেছে শ্রীমতী খাল। এর এক পাশে করল গ্রাম, আরেক পাশে ভাটিখাইন গ্রাম, পশ্চিমে ছনহরা ইউনিয়ন। দুই পাড়ে আছে প্রাইমারি স্কুল, উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদ্রাসা। খাল পারাপারে বানানো বাঁশের সাঁকোটি প্রতিবছর বর্ষা এলে তলিয়ে যেত।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, ভাটিখাইন গ্রামে কেউ মারা গেলে কবরস্থানে মৃত ব্যক্তির খাটিয়া নিয়ে যেতে সাঁকো পার হওয়া ছিল কষ্টসাধ্য। অনেক সময় খালে নেমে খাটিয়া পার করতে হতো, নাহয় দীর্ঘপথ হেঁটে দক্ষিণপাড়া করল-ভাটিখাইন জামে মসজিদের পাশে কবরস্থানে দাফন করতে যেতে হতো।
করল গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেত। ইরি-বোরো মৌসুমে সাঁকো দিয়ে ধান পরিবহন করতে ভোগান্তি হতো চাষিদের।
ভাটিখাইন-করল দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ সেতু প্রকল্পের যুগ্ম সম্পাদক এএইচএম কাউছার জানান, ‘২০ বছর ধরে ভাটিখাইন-করল গ্রামের মানুষ শ্রীমতি খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ধরনা দিয়ে গেছেন। সবাই শুধু আশ্বাস দিয়েছে। কেউ এগিয়ে আসেনি স্থায়ী সেতু নির্মাণে।’
তিনি জানান, স্থানীয় উদ্যোগে সেতু নির্মাণে দুই গ্রামের মানুষের সমন্বয়ে একটি কমিটি হয়। এই কমিটির উদ্যোগে স্টিল স্ট্রাকচারে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু।
সেতু প্রকল্পের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা না হলেও মানুষ চলাচলে সেতু খুলে দেয়া হয়েছে। প্রায় ছয় মাস সময় লেগেছে সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে। ভাটিখাইন-করল গ্রামের লোকজনের টাকায় এই সেতু নির্মিত হয়েছে।’