পটুয়াখালী শহরের নিউমার্কেট এলাকায় আগুনে ৫২টি দোকান পুড়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে লাগা আগুন দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফিরোজ আহম্মেদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাত আনুমানিক পৌনে ৪টার দিকে আগুন লাগে। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ আগুন লাগার প্রকৃত কারণ তদন্তের পর জানা যাবে।
নিউমার্কেট থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিটের হলেও ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছতে দেরির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, পৌরসভা থেকে এখানে বহুতল ভবন তৈরির কথা জনিয়ে তাদের একাধিকবার সরে যেতে বলা হয়েছে। আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের দেরিতে আসা এটি পরিকল্পিত কি না সেই সন্দেহ প্রকট হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে চালের আড়ত ও মনিহারির দোকান বেশি।
মার্কেটের বৈশাখী রাইস এজেন্সির মালিক রিপন মিয়া জানান, তার আড়তে প্রায় চার হাজার বস্তা চাল ছিল।
তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিদ্যুতের লাইনের সুইচ বন্ধ করে বাসায় চলে যাই। ভোররাতে আরেক ব্যবসায়ী ফোন করে আগুন লাগার কথা জানান। এসে দেখি আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো উপায় না পেয়ে সবার সঙ্গে আমিও পানি ছিটাতে থাকি। কিন্তু ততক্ষণে আমার দোকানের সব শেষ।’
বিসমিল্লাহ রাইস নামে আরেক দোকানমালিক মনির হোসেন জানান, তার দোকানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার চাল নষ্ট হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে দেরি করেছে, নাহলে তার দোকানটা রক্ষা করা যেত।
আরেক চাল ব্যবসায়ী মনির বলেন, ‘পৌরসভা থেকে দোকান সরানোর জন্য বলা হয়েছিল। তার ওপর আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দেরিতে এসেছে। সব মিলিয়ে আমার কাছে সন্দেহ লাগছে।’
কসমেটিকস ব্যবসায়ী সুদেব হাওলাদার বলেন, ‘তার দোকানে তিন থেকে চার লাখ টাকার মালামাল ছিল। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে গেছে। এখন আমার চলার মতো কোনো অবলম্বন নাই। সব হারিয়ে আমি নিঃস্ব।’
মনিহারি দোকানদার স্বপন সাহা বলেন, ‘আমার দোকানে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল ছিল। সব পুড়ে একাকার হয়ে গেছে। একটি পোড়া টিনও তিনি পাননি। তার দোকানের ওপর এখন শুধু ছাই পড়ে আছে।’
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহজালাল খান বলেন, ‘ সব মিলিয়ে আগুনে অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পৌরসভার পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, এটি পরিকল্পিত কি না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের মালামাল যাতে চুরি না হয় সে বিষয়টি দেখার জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।