চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় সাজা ঘোষণার পর আদালতের কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে তিন দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে গত সোমবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ খাইরুল আমীনের আদালতে রায় ঘোষণার পর আসামি আবুল হাসেম মাঝি পালিয়ে যান। পরে প্রথম যুগ্ম জেলা জজ খাইরুল আমীনের আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
আবুল হাসেমের আইনজীবী আশিষ কুমার শীল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মক্কেল রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে পালিয়ে গেছেন। তাকে এখনও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রায় ঘোষণার সময় কাঠগড়ায় হাজির করা হয় আসামি আবুল হাসেমকে। বিচারক তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। রায় ঘোষণার পরপরই আসামি উধাও হয়ে যান।
জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, আসামি পালানোর পর আদালত ওই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
সোমবার আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুদ্দিন পারভেজ বলেন, ‘চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় বিচারক সাজা ঘোষণার পর আসামিকে কারাগারে নেয়ার জন্য পুলিশ ডাকা হলে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ সুযোগে আসামি পালিয়ে যান।’
জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জেলা পুলিশের আওতায় ৪৭টি কোর্ট আছে। পুলিশ সদস্যরা সব সময় কোর্টে থাকেন। সোমবার আসামি পালায়নের কোনো খবর আমরা পাইনি। বিষয়টি আমাদের নজরে নেই। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ইটভাটায় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে থাকেন আবুল হাসেম। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেসার্স চারিয়া ব্রিকস ফিল্ড মালিক মো. কাশেমের সঙ্গে শ্রমিক নিয়োগের চুক্তি করেন তিনি। এ জন্য মো. কাশেমের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা নেন আবুল হাসেম। পরে শ্রমিক সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইটভাটার মালিক টাকা ফেরত চান।
আসামি ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল নোয়াখালীর খলিফারহাট সোনালী ব্যাংকের নিজ হিসাবের ২২ লাখ টাকার চেক দেন মো. কাশেমকে। চেকটি কাশেম ব্যাংকে উপস্থাপন করলে আসামির ব্যাংক হিসাব দুই বছর আগে ২০১৭ সালের ২৬ জুন বন্ধ হয়ে যায় বলে উল্লেখ করে চেকটি ডিজ-অনার (প্রত্যাখ্যান) হয়।
এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই আসামিকে আইনি নোটিশ দেয়ার পর ওই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করা হয়। সোমবার ছিল রায় ঘোষণার দিন।
আসামির আইনজীবী আশিষ কুমার শীল বলেন, দুপুরে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তখন আসামি কাঠগড়ায় ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তিনি কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান। তখন বিচারক ডেকেও কোনো পুলিশ সদস্য পাননি।