স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবি রায় নামের ঐ ব্যবসায়ী ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ধর্ম অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের।
বিক্ষোভ ও আটকের ঘটনাটি বুধবার দুপুরের। পরিস্থিতি সামলাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকল দিক মাথায় রেখে তদন্ত শুরু করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল।
পুলিশ জানায়, রবি রায় নামে যে ব্যবসায়ীকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার বাড়ি সরাইলের অরুয়াইল গ্রামে। তিনি অরুয়াইল বাজারে মুদি মালের ব্যবসা করেন।
তার বড় ভাই কাপড় ব্যবসায়ী রতন রায়ের বিরুদ্ধে পাঁচ মাস আগে একই রকম অভিযোগ তুলেছিল এলাকার কিছু লোকজন। গত ৭ মে পুলিশ রতন রায়কে গ্রেপ্তার করে। তখন পুলিশ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে। রতন বর্তমানে কারাগারে আছেন। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার ছোট ভাই রবি রায়ের বিরুদ্ধে অভিন্ন অভিযোগ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এলাকার লোকজন জানান, রতন ও রবির বাবা অবনী রায় মারা গেছেন। অরুয়াইল বাজারে তাদের একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। গ্রামে তাদের অনেক সম্পত্তি। রবি রায় ২০০১ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা না দিয়েই পারিবারিক ব্যবসায়ে যোগ দেন। তিনি মুদি দোকানে বসতেন। পাশেই বড় ভাই রতন কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
রবি রায় একটি ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছেন দাবি করে বুধবার দুপুর একটার দিকে মিছিল বের করেন এলাকার কিছু লোকজন। স্থানীয় যুবলীগ নেতা হোসেন খন্দকার এতে নেতৃত্ব দেন। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে দোকান থেকে রবি রায়কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রবি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশের কাছে বলেন, ‘আমি ঠিকমতো ফেসবুক চালাতে জানি না, আমি এ কাজ করিনি। আমরা বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।’
পুলিশ জানায়, রবি রায়ের নামে দুটি ফেসবুক আইডি পাওয়া গেছে। যার একটিরও পাসওয়ার্ড তিনি জানেন না।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বিষয়টি দেখছি। নির্দোষ কেউ হয়রানির শিকার হবে না। অভিযুক্ত রবি রায়কে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত চলছে, আপত্তিকর পোষ্টদাতাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’