বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মানুষের শহরমুখী স্রোত কমানোর কৌশল জানাল বিআইডিএস

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২১ ২৩:২৫

‘মানুষকে গ্রাম থেকে ঢাকা বা অন্য শহরে আসতে ঠেকাতে গ্রামাঞ্চলে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। যদি অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ হয়, সেখানে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। তখন গ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ বাড়বে। অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং মাইগ্রেশন অবশ্যই কমে আসবে। আমাদের সম্পদ সীমিত সম্পদ, অসীম চাহিদা এই বাস্তবতা মেনে কৃষি এবং অকৃষি দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’

গ্রাম ও পৌর এলাকায় অকৃষি খাতের আয় ১ শতাংশ বাড়লে শহরমুখী মানুষের স্রোত ৪ থেকে ৭ শতাংশ কমবে।

সরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

বিআইডিএস বলছে, কেবল কৃষি আয় দিয়ে শহরমুখী মানুষের স্রোত ঠেকানো সম্ভব নয়। গ্রাম থেকে শহরে আসা বা এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়া ঠেকাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায় গ্রামে গ্রামে কিংবা ইউনিয়ন পর্যায়ে ছোট ছোট শিল্প গড়ে তোলা।

গ্রামে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে বিআইডিএস।

‘আমার গ্রাম আমার শহর’ বর্তমান সরকারের জনপ্রিয় একটি স্লোগান। গ্রাম এবং শহরের ব্যবধান ঘুঁচিয়ে শহরের ওপর চাপ কমানোর কথা বলা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও। সরকারের এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হলো? কেনই বা শহরে মানুষের ঢল থামানো যাচ্ছে না।

২০১৬ সালের খানা আয় এবং ব্যয় জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন এই গবেষণা করেছেন বিআইডএস এর একদল গবেষক।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গ্রাম বা ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি অকৃষি খাতে কর্মকাণ্ড বাড়ে, তাহলে অকৃষিখাতে আয় বেড়ে যাবে। আর এমনটা হলে ওই অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যাওয়া ঠেকাতে বা মাইগ্রেশনের প্রবণতা কমে যাবে। অকৃষি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারলে মাইগ্রেশনের হারটা কমে আসবে।’

উন্নত, সমৃদ্ধ দেশের কাতারে যেতে হলে শিল্পের অবদান বাড়াতেই হবে বলে প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের খানা আয় ও ব্যয় জরিপের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। সেই খানা আয় ও ব্যয় জরিপের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা করে পেয়েছি যে, গ্রাম বা ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় যদি অকৃষি খাতের আয় ১ শতাংশ বাড়ানো যায়, তাহলে ওই এলাকা থেকে অন্য জেলা, শহর বা রাজধানী ঢাকামুখী মানুষের স্রোত ৪ থেকে ৭ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

তবে অকৃষি অকৃষি খাতে জোর দিলে কৃষি উৎপাদন কমে যেতে পারে-এমন আশঙ্কা করেছেন এই গবেষক। বলেন, ‘আমরা গবেষণায় পরামর্শ আকারে বলেছি, আমাদের সীমিত সম্পদ, কিন্তু অসীম চাহিদা- এই বাস্তবতা মেনে কৃষি এবং অকৃষি দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

‘বাস্তব অবস্থা সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে এজজন সাধারণ মানুষ সবাইকে উপলদ্ধি করতে হবে। দেশের সব মানুষ যাতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে-সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শহরমুখী মানুষের স্রোত যে করেই হোক ঠেকাতে হবে।’

সাম্প্রতিক সময়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার বারবার লকডাউন দিয়েও তা সফল করতে পারেনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব বাধা পেরিয়ে দল বেঁধে গ্রামের বাড়িতে ছুটেছে। প্রতি ঈদের ছুটিতেও ঝুঁকি নিয়ে গ্রামে যায় মানুষ, আবার ফিরে আসে।

‘মানুষের শহরমুখি হওয়ার প্রবণতা যদি ঠেকানো যেতো, তাহলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে না।’

সেমিনার

বুধবার বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস মিলনায়তনে এই গবেষার ওপর একটি সেমিনার হয়। এতে গবেষক কাজী ইকবাল ছাড়াও বিআইডেএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন, চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান বিআইডিএসেরর পরামর্শক শাইখ সিরাজসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

বিনায়ক সেন বলেন, ‘মানুষকে গ্রাম থেকে ঢাকা বা অন্য শহরে আসতে ঠেকাতে গ্রামাঞ্চলে অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। যদি অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ হয়, সেখানে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। তখন গ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ বাড়বে। অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং মাইগ্রেশন অবশ্যই কমে আসবে।

‘আমাদের সম্পদ সীমিত সম্পদ, অসীম চাহিদা এই বাস্তবতা মেনে কৃষি এবং অকৃষি দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’

শাইখ সিরাজ বলেন, ‘অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি জাপানে কৃষিতে স্মার্ট ফার্মিংয়ে বিনিয়োগ করেছে। আমাদেরও সেই পথে যেতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর