অনিবন্ধিত বা অনুমোদিত সুদ কারবারি ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ বিষয়ে লিখিত আদেশ দেয়।
এতে অনিবন্ধিত বা অননুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠনে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়া হয়।
তদন্তকালীন সময়ে কোনো অননুমোদিত বা লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সেগুলো বন্ধ করে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।
চড়া সুদে ঋণদানকারী স্থানীয় মহাজনদের তালিকা দিতে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকেও নির্দেশ দেয়া হয়।
যারা অবৈধভাবে সুদ ব্যবসা করে, তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তা বন্ধ করতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর আদেশ দিয়েছিল আদালত।
বুধবার সেই আদেশের অনুলিপি প্রকাশ করেছে আদালত। তিন পৃষ্ঠার লিখিত অনুলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
তিনি বলেন, ‘এই আদেশের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের বরাবর যাওয়া মাত্রই আদেশের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিতে হবে। কেননা আদালত ৪৫ দিনের সময় দিয়েছে।’
সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন আলোচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন
জনগণের কাছ থেকে কারা আমানত সংগ্রহ ও ঋণ দিতে পারবে এবং ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার কত হবে, সেটি আইন দ্বারা নির্দিষ্ট। কিন্তু এর বাইরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মানুষকে ঋণ দিয়ে উচ্চ হারে সুদ আদায় করে থাকে।
ব্যাংক খাতে ক্রেটিড কার্ড ছাড়া এখন বার্ষিক সর্বোচ্চ সুদ হার ৯ শতাংশের মধ্যে। তবে সুদ কারবারিরা মাসে ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি হারে সুদে ঋণ দিয়ে থাকেন।
এই ঋণের বিপরীতে জমি বা বাড়িঘরের দলিল বা অন্য মূল্যবান সম্পদ বন্ধক রাখা হয়। টাকা দিতে না পারলে প্রায়ই সেগুলো দখল করে নেয়ার অভিযোগ আসে গণমাধ্যমে। সুদের টাকা দিতে না পেরে আত্মহত্যার ঘটনাও বিরল নয়।
এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর সুদের কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট করেন ব্যারিস্টার সুমন।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা’ শিরোনামে গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করা হয় এই আবেদনে।
আদালতে রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।
রিটে অর্থসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ১৩৬ ব্যক্তিকে বিবাদী করা হয়।