বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জরায়ু ক্যানসারে দেশে মৃত্যুহার বেশি কেন

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২১ ১৫:১২

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৮ হাজার নারী নতুন করে জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর প্রতি বছর ১২ হাজার নারীর মৃত্যু হচ্ছে এই ক্যানসারে।

দেশে নারীদের জরায়ুমুখে ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। এই হার বিশ্বে মোট মৃত্যুর হিসাবের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবশেষ তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ৫ লাখ ৭০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয় ৩ লাখ ১০ হাজার।

সংস্থাটি বলছে, এই মৃত্যুর ৯০ শতাংশের ঘটনাই ঘটছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।

বাংলাদেশে এই ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যাও গত কয়েক বছর থেকেই বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৮ হাজার নারী নতুন করে জরায়ুমুখের ক্যানসাে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর প্রতি বছর ১২ হাজার নারীর মৃত্যু হচ্ছে এই ক্যানসারে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে জনসংখ্যা ৭৭৫ কোটি। এর অর্ধেক নারী ধরা হলে বিশ্বে প্রতি বছর জরায়ুমুখে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ০০৮ শতাংশ। সে হিসাবে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। যা বিশ্বের মৃত্যুর হার থেকে দ্বিগুণ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব সেরিব্রাল পালসি দিবস-২০২১ উদযাপন ও জরায়ু ক্যানসার নির্ণয়ে এইচপিভি ল্যাবের উদ্বোধনে এমন তথ্য জানান শারফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘জরায়ুমুখে ক্যানসার বাংলাদেশে নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ। নারীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ও নারীদের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা, মহিলাদের জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উদ্দেশ্যে কার্যকরভাবে এ ক্যানসার নির্ণয়ে কাজ করছি আমরা।’

এই অধ্যাপক বলেন, ‘জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি ডিএনএ টেস্টের ভূমিকা অনেক। সেটি আরও ভালোভাবে নির্ণয়ের জন্যই এইচপিভি ল্যাবের যাত্রা।’

এই ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসায় ‘আর নয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যানসার, নিরাপদে থাকবে নারী, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে কাজ করার কথা জানান তিনি।

যে কারণে হয় জরায়ুমুখ ক্যানসার

ক্যানসারের এই ধরনকে বলা হয় ‘নীরব প্রাণঘাতক’। এটি বলার কারণ হচ্ছে, অনেক নারী বুঝতেই পারেন না তারা এ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই দেশে মৃত্যু হারও বাড়ছে।

এ ক্যানসারের অন্যতম কারণ বলা হয়, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি)। এই ভাইরাসের আবার ১০০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসবের মধ্যে দুটি প্রজাতি নারীদের জরায়ুমুখে ক্যানসারের কারণ।

অবশ্য ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশের পরই ক্যানসার আক্রান্ত হয় না। জীবাণু প্রবেশের পর অন্তত ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লাগে জরায়ুমুখে ক্যানসার হতে। তাই এটি নির্ণয়েও সময় পাওয়া যায় অনেক।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, সময় পাওয়া গেলেও এর একটি প্রধান সমস্যা হলো, একেবারে শেষ পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত এবং ব্যথা শুরু না হওয়া পর্যন্ত নারীরা এর কোনো লক্ষণ বুঝতে পারেন না। তাই অনেকেই এটিকে পিরিয়ডকেন্দ্রিক সমস্যা মনে করে গুরুত্ব দেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যানসার ইপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাইরাস। ভাইরাসটির নাম এইচডব্লিউপি। এই ভাইরাস আক্রান্ত হলেও সবাই কিন্তু ক্যানসারে আক্রান্ত হয় না। অনেক ক্ষেত্রে এই ভাইরাস চিকিৎসা ছাড়া ভালো হয়ে যায়। তবে এমন ভাইরাস দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। না হলে সমস্যা তৈরি হতে পারে।’

এ ছাড়া অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ৩৫ বছরের কোটায় এবং ৫০-৫৫ বছর বয়সের সময়৷

অল্প বয়সে বিয়ে হলে বা যৌনমিলনের ফলেও এটি হতে পারে।

২০ বছরের কম বয়সে গর্ভধারণ ও মা হওয়ার কারণেও এটি হতে পারে।

অধিক ও ঘনঘন সন্তান প্রসব করলে এবং বহুগামিতাতেও হতে পারে এ রোগ।

যেসব লক্ষণে বোঝা যায়

এ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে আচমকা ক্ষুধা কমে যেতে শুরু করে।

সবসময় বমি বমি ভাব কিংবা ঘন ঘন বমি হওয়া।

পেটে অতিরিক্ত ব্যথা কিংবা পেট ফুলে যাওয়া।

অ্যাসিডিটি, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে শুরু করে। হালকা খাবারের পরও ভরপেট অনুভব হয়, পেটে অস্বস্তি লাগে। এ ছাড়া পেটের বিভিন্ন সমস্যা বাড়লেও সেটিও জরায়ু ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

যৌনাঙ্গের চারপাশে চাপ বোধ হয়, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করা।

ওজন বাড়তে থাকে, কিংবা হঠাৎ করে ওজন অনেক কমে যেতে থাকে।

অভ্যস্ত থাকার পরেও যৌনমিলনের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া।

অতিরিক্ত ক্লান্তি বা বিষাদবোধ হয়।

এ বিভাগের আরো খবর