সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭৬ আউটসোর্সিং কর্মী পাঁচ মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটছে শ্রমিকদের। তাদের অভিযোগ, নিয়োগ দেয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, টাকার ঘাটতি নেই। নিয়ম অনুসারে ঠিকাদার বিল জমা দিলে বরাদ্দ দেয়া হবে। তবে এই নিয়ম মানতে নারাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিমা এসোসিয়েটস্ লিমিটেডের মালিক দেলোয়ার হোসেন।
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে ৭৬ জন আউটসোর্সিং কর্মী রয়েছেন। প্রতি মাসে ১৬ হাজার ১৩০ টাকা করে তাদের বেতন পাওয়ার কথা। এই টাকা যাওয়ার কথা তাদের ব্যাংক হিসাবে।
শ্রমিকরা বলছেন, বেতন তাদের অ্যাকাউন্টে দেয়া হয় না। তারওপর সাড়ে ১২ হাজার টাকা দিয়ে কর্মীদের কাছ থেকে সই নেয়া হয় ১৬ হাজার ১৩০ টাকার সিটে। তাও দেয়া হয় ২ থেকে ৩ মাস পরপর। এ দুর্নীতি ঠেকাতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বেতন-বিলে সই করছেন না।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী জহিরুল হক জনি বলেন, ‘শ্রমের তুলনায় বেতন কম। তারপরে আবার ৫ মাস ধরে বেতন নেই। সংসার আর চালাতে পারছি না। ধার-দেনা করে এতদিন চালিয়েছিলাম। এখন আর চলা যাচ্ছে না।’
নামপ্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আউটসোর্সিংকর্মী বলেছেন, তাদের প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকার বেশি কম দেয়া হতো। এ ভাবে গত সাড়ে চার বছরে কর্মীদের প্রায় ১ কোটি টাকা পিমা এসোসিয়েটস্ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ মেরে দিয়েছে। তারা প্রতিবাদ করতে পারে না চাকরি যাওয়ায় ভয়ে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘আপনারা পত্রিকায় লেখালেখি করে কী করবেন? কিছুই হবে না আমার। এর আগেও আমার বিরুদ্ধে অনেক লেখালেখি হয়েছে।
‘আমি ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করে চলি। অনেক জায়গায় টাকা দিতে হয়। আমি বাড়ির জমি বিক্রি করে তো তাদের টাকা দিব না।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘নিয়ম হলো, কর্মীদের বেতন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করে আমার কাছে বিল দাখিল করতে হবে। আমি সেই বিল পাস করলে ঠিকাদার কর্মীদের বিল দেবে।
‘আমি লক্ষ্য করেছি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না দিয়ে তৈরি করা বিলে সই করিয়ে আমার কাছে আনা হয়। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি, বিধি মোতাবেক আমার কাছে বিল প্লেস করতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকার ঘাটতি নেই। বিধি মোতাবেক আসলেই ঠিকাদারের বিল দেয়া হবে।’