অনিবন্ধিত বা অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধের কার্যক্রম শুরুর প্রথম তিন দিনে ১ লাখ ২৫ হাজার সেট বন্ধ করা হয়েছে। ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টারে (এনইআইআর) নিবন্ধন না থাকায় এসব হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
তিন মাস পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পর ১ অক্টোরব থেকে বিটিআরসি অনিবন্ধিত নতুন মোবাইল হেন্ডসেট বন্ধ করা শুরু করে।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম তিন দিনে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৫২টি সেট তাদের নেটওয়ার্কে নতুন শনাক্ত হয়। এর মধ্যে নেটওয়ার্কে নতুন যুক্ত হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৮২৭টি মোবাইল। তবে নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে চেয়েও পারেনি ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৬১টি হ্যান্ডসেট।
এ বিষয়ে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ১ অক্টোবর থেকে চূড়ান্তভাবে অনিবন্ধিত মোবাইল বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এখন আর কোনো আনঅফিশিয়াল বা অবৈধ হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে না। এরই মধ্যে বেশ কিছু হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।’
এনইআইআর সিস্টেমের মাধ্যমে বিটিআরসির ডাটাবেজে মোবাইল হ্যান্ড সেটের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) নম্বর সংরক্ষিত থাকে। ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে এনইআইআর চালু হয়। পরে গত ১ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়েছে।
বিটিআরসি থেকে জানানো হয়, অক্টোবরের আগ পর্যন্ত যত হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে, সেগুলো সয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন হয়ে গেছে। এমনকি দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত সেট এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা মোবাইল সেটও এনইআইআরে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিটিআরসি আরও বলছে, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনইআইআর ডাটাবেজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রায় ৪৪ কোটি হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর নিবন্ধন হয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি বর্তমানে নেটওয়ার্কে সচল হয়েছে। প্রায় ২২ কোটি বৈধ হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এগুলো মূলত বৈধভাবে উৎপাদিত ও আমদানি করা, যেগুলো বিক্রির অপেক্ষায় আছে।
যেভাবে নিবন্ধন
বিটিআরসি বলছে, নতুন কোনো মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে প্রবেশ করলে ফোনটি নিবন্ধিত কি না, তা জানিয়ে তাকে বার্তা পাঠানো হবে। সেই বার্তায় যদি মোবাইল ফোনটি অনিবন্ধিত বলে জানানো হয়, তবে তাদের বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম পূরণ করে নিবন্ধন নিতে হবে।
নতুন সেট নিবন্ধন নিতে মোবাইল কেনার রসিদ জমা দিতে হবে। বিদেশ থেকে আনা ব্যক্তিগত ব্যবহারের সেটের ক্ষেত্রে সেই দেশ থেকে কেনার যথাযথ প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। এ ক্ষেত্রে পণ্য ক্রয়ের রশিদ, চালানপত্র, পাসপোর্টে ভিসার কপি, ইমিগ্রেশন কপি জমা দিতে হবে। বিদেশ থেকে যারা হ্যান্ডসেট নিয়ে আসবেন তারা বিটিআরসির ওয়েবসাইট থেকে কিংবা মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র থেকে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন করতে পারবেন।
বিদ্যমান ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে শুল্কবিহীন সর্বোচ্চ দুটি এবং শুল্ক পরিশোধ করে আরও ছয়টি মোবাইল হ্যান্ডসেট আনতে পারবেন। ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী আনা সেটগুলো বিশেষ নিবন্ধনের আওতাভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
অনিবন্ধিত হ্যান্ড সেট বিক্রি না করতে বিক্রেতাদের বারণ করেছে বিটিআরসি। বিক্রিত সেট অনিবন্ধিত হলে অবশ্যই ক্রেতাকে টাকা ফেরত দিতে হবে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নতুন মোবাইল কেনা ব্যক্তি KYD (স্পেস) ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে 16002 নম্বরে পাঠিয়ে দিলেই মোবাইলটি নিবন্ধিত কি না, তা জানতে পারবেন। আইএমইআই নম্বর বক্সে লেখা থাকে। এ ছাড়া *#06# ডায়াল করেও আইএমইআই নম্বর জানা যায়।