বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিএনপি নেতার ছেলে ছাত্রলীগের পদে

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ২২:৩৩

ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ তার বাবা বিএনপি নেতা ছিলেন স্বীকার করে জানান, তার বাবা ২০১৬ সালে মারা যান। আর তিনি ২০১৪ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এতদিন কোনো পদে ছিলেন না। এটিই তার প্রথম পদ।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত বলে তথ্য মিলেছে। উপজেলার দায়িত্ব পাওয়া দুই নেতার মধ্যে একজন আগে কোনো পদেই ছিলেন না।

নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসানের বাবা প্রয়াত আব্দুল হামিদ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন।

জাহিদ নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তার বাবা ২০১৬ সালে মারা যান। আর তিনি ২০১৪ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এতদিন কোনো পদে ছিলেন না। এটিই তার প্রথম পদ।

আর সভাপতি সোহেল রানার চাচাতো ভাই উপজেলা শ্রমিক দলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

সম্মেলন ছাড়াই সোহেল রানাকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং জাহিদ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা ছাত্রলীগ। এর পরই শুরু হয় সমালোচনা। বিক্ষোভও করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

ছাত্রলীগের ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে এমন দুজনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করায় জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামের সমালোচনাও হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে বিএনপিমনা পরিবারের সদস্যদের ছাত্রলীগের পদে দেয়ার অভিযোগ করছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরাই।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দাবি, পদ না পাওয়ায় মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, পূর্বঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার ফরিদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সোহেল রানাকে সভাপতি ও জাহিদ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা ছাত্রলীগ।

উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির ফয়সাল বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। তবে হঠাৎ করেই কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই সোহেল ও জাহিদকে সভাপতি-সম্পাদক মনোনীত করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, সভাপতি সোহেলের চাচাতো ভাই উপজেলা শ্রমিক দলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক। আর সাধারণ সম্পাদক জাহিদের বাবা প্রয়াত আব্দুল হামিদ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও বনওয়ারী নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘জাহিদ ছাত্রলীগের কোনো ইউনিটের সদস্যও ছিলেন না। ত্যাগী কর্মীদের কোনো সুযোগ না দিয়ে জেলা ছাত্রলীগ অর্থের বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের সন্তানদের কাছে কমিটি বিক্রি করেছে। আমরা এই বিতর্কিত কমিটি বাতিল চাই।’

ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম বকুলও প্রয়াত আব্দুল হামিদ বিএনপির নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আব্দুল হামিদের মৃত্যুতে উপজেলা বিএনপি শোকসভাও করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘কমিটি দেয়ার নাম করে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব বিশ্বাসের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় টাকা নিয়েছেন। এখন শুনছি সব প্রার্থীর কাছ থেকেই তারা টাকা নিয়ে কমিটি বাণিজ্য করেছেন।’

জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও ফরিদপুরের পৌর মেয়র কামরুজ্জামান মাজেদ বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের বারবার বলেছিলাম সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে। তারা তা না শুনে বিএনপি পরিবারের অছাত্র ব্যবসায়ীদের সভাপতি-সম্পাদক বানিয়েছে। কমিটি-বাণিজ্য করতেই প্রেস রিলিজনির্ভর কমিটি দেয়া হচ্ছে। এটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত।’

অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেয়ার বিষয়টি অবশ্য অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সদ্য মনোনীত নেতারা বিএনপি পরিবারের নয় বলেও দাবি তাদের।

জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী বলেন, ‘কমিটি গঠনে কোনো প্রকার টাকার লেনদেন হয়নি। কে, কোথায় টাকা নিয়েছে আমার জানা নেই। পদ না পেয়ে অনেকে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।

‘উপজেলা সভাপতি মনোনয়ন পাওয়া সোহেল রানা এর আগেও ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন। জাহিদ হাসানকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশে পদ দেয়া হয়েছে।’

সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সদ্য মনোনীত নেতারা বিএনপি পরিবারের নয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের মতামতের ভিত্তিতেই তাদের পদ দেয়া হয়েছে।’

অর্থ নেয়ার প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর