বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শরীয়তপুরে যুবলীগের ৩ গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ২২:১০

জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে এক গ্রুপ শোডাউন শুরু করে। ওই শোডাউন থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। পরে তিন গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরে জেলা যুবলীগের তিন গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।

সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২টি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে এক গ্রুপ শোডাউন শুরু করে। ওই শোডাউন থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। পরে তিন গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জেলা যুবলীগের একাধিক সূত্র জানায়, সকাল ১০টার দিকে শহরের পালং বাজারে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে যুবলীগের বর্ধিত সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ওই সভা শুরু হয় দুপুর ১২টার দিকে।

সকালে শরীয়তপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের সমর্থকরা শোডাউন করে সভায় আসছিলেন। শহরের মনোহর বাজার মোড়ে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর সমর্থকরা তাদের বাধা দেন।

এ সময় শুরু হয় দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। তখন উভয় গ্রুপের লোকজন কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে সংঘর্ষ।

দুপুরে শরীয়তপুর পৌর মেয়র পারভেজ রহমান জনের সমর্থকরা সভায় যোগ দিতে যান। পথে কোটপাড়া এলাকায় অবস্থান নেয়া ইকবাল হোসেন অপুর সমর্থকরা তাদের বাধা দিলে আবারও কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

শহরজুড়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে পথচারী, শিক্ষকসহ অন্তত ২০ আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সরকারি শিশু পরিবার স্কুলের শিক্ষক শামীম মিয়া বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলাম। মিছিল দেখে রাস্তার পাশে দাঁড়াই। সেখানে মিছিলের লোকজন আমাকে রড দিয়ে পেটায়। মোটরসাইকেলটা ভেঙে ফেলেছে। পরে এক সাংবাদিক ভাই আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।’

জেলা যুবলীগের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এটি যেহেতু সাংগঠনিক সভা, তাই জেলার নির্বাহী কমিটি ও প্রতিটি উপজেলা কমিটির নয়জন করে এবং সদর পৌরসভার নয়জন যোগ দিয়েছেন। আর ছয়জন কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নিয়েছেন। এর বাইরে কাউকে অনুষ্ঠানে আসতে দেয়া হয়নি। শুনেছি অনেকে শোডাউনের জন্য লোকজন জড়ো করেছেন। তারা বিশৃঙ্খলা করেছেন। এর দায় জেলা যুবলীগ নেবে না।’

সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন দীপু মিয়া বলেন, ‘যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে একটি মহল অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছিল। এমপির পক্ষে আমরা তা প্রতিহত করার জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে কর্মীদের জড়ো করেছি। আমাদের কেউ সংঘর্ষে জড়ায়নি।’

পৌর মেয়র পারভেজ রহমান জন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম হচ্ছে। অনেক নেতা-কর্মী অনুষ্ঠানে যাবে। কিন্তু একটি পক্ষ অনুষ্ঠানে যেতে বাধা সৃষ্টি করেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।’

যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বর্ধিত সভাটি সুন্দরভাবে করা হয়েছে। সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। বাইরে যারা বিশৃঙ্খলা করেছে, তারা যুবলীগের কেউ নয়। তাদের কাউকে যুবলীগে স্থান দেয়া হবে না।’

শরীয়তপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, ‘জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকেই পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশের ফাঁকা গুলিবর্ষণ করতে হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

২০০৫ সালে শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সম্মেলনের পর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৬ বছরে আর কমিটি করা হয়নি। জেলা কমিটির শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে চলে গেছেন। কেউ কেউ অন্য দলে চলে গেছেন, কেউবা দেশের বাইরে। মারা গেছেন কয়েকজন। এমন পরিস্থিতিতে জোড়াতালি দিয়ে চলছিল সাংগঠনিক কার্যক্রম।

যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, সংগঠনকে গতিশীল করতে বর্ধিত সভা ডাকা হয়। ওই সভা ঘিরে যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের তৎপর হয়ে উঠেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর