গত ১ এপ্রিল থেকে রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে পরীক্ষামূলক বাস চলাচল শুরুর কথা ছিল রাজধানীতে। পরে পিছিয়ে সেটি সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ করা হয়। তবে সেটা ৭ সেপ্টেম্বরও চালু হয়নি। এবার নতুন করে সময় নির্ধারণ হলো ডিসেম্বরের ১ তারিখ।
মঙ্গলবার ‘বাস রুট র্যাশনালাইজেশন’ কমিটির ১৮তম সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
১২০টি নতুন বাস নিয়ে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এসব বাসের পরীক্ষামূলক যাত্রা। কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার পথে এগুলো চলবে।
২০১৬ সালের শুরুতে ছয়টি কোম্পানির অধীনে ছয় রঙের বাস নামানোর উদ্যোগ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। এ জন্য দেড় বছরের মধ্যে নতুন ৩ হাজার বাস নামানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেমে যায় উদ্যোগ।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মুখ থুবড়ে পড়া সেই উদ্যোগই নতুন করে এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়।
ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস অবশ্য বলেছেন, এই প্রক্রিয়া জটল ছিল। তারা সেটি অতিক্রম করার চেষ্টা করে চলেছেন।
তাপস বলেন, ‘আমরা দায়িত্বভার গ্রহণের পর গত বছরের ৬ অক্টোবর আমাদের প্রথম সভা (কমিটির ১২তম সভা) করি। এই করোনা মহামারির মাঝেও আমরা পুরোদমে কাজ করে চলেছি। যার ফলে আজকে আনন্দের সাথে বলতে পারি, যেটা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ছিল, যেটা অত্যন্ত জটিল, দুরুহ সমস্যা ছিল, তা আমরা সমাধানের কাছাকাছি নিয়ে এসেছি।’
১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত তারিখ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর এই পাইলটিং রুটে নতুন নিয়মে, নতুন পদ্ধতিতে বাস চলবে। এ রুটে চলাচলকারী পরিবহনের নাম ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে নামকরণ করা হবে।
তাপস আশা করেন, ১ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী তাজুল ইসলাম উপস্থিত থেকে এটি উদ্বোধন করবেন।
পরীক্ষামূলক রুটে কার্যক্রম শুরুর পর পর্যায়ক্রমে এই ক্লাস্টারের বাকি যাত্রাপথগুলোতেও কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।
নতুন রুটে কোনো পুরাতন বাস থাকবে না জানিয়ে তাপস বলেন, ‘ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে পুরোনো বাস চলবে না। এখন এই রুটে যে বাসগুলো চলছে, সেগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারির পর কেনা বাস থাকবে। বাকি বাসগুলো উঠিয়ে নেওয়া হবে। এর সঙ্গে নতুন বাস যোগ হবে। সব মিলিয়ে এই রুটে ১২০টি নতুন বাস চলাচল করবে। এই প্রস্তাবনায় পরিবহন মালিকসহ সকলেরই সম্মতি রয়েছে।’
নতুন রুট কেমন হবে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রুটে চলাচলকারী পরিবহনের ড্রাইভার এবং হেলপারের একটি নির্দিষ্ট পোশাক থাকবে। আগামী ২০ তারিখে এ রুটে চলাচলকারী বাসের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে।’
নতুন এই রুটে ৪০টির বেশি যাত্রী ছাউনি করা হবে। বাস বে হবে ১৬টি। জায়গা সংকটের কারণে বাস বের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন আতিকুল ইসলাম। এছাড়া এ রুটের বাসগুলোর রং কী হবে, তা আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পরে ২০ অক্টোবর বাসের রং নির্ধারণ করা হবে।
সভায় ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।