বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাজস্ব আদায়ে তেজিভাব

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ১৮:৫৪

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, আমদানি-রপ্তানিতে গতি এসেছে। চাঙ্গা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আহরণে। শুধু আগস্ট মাসেই শুল্ক-কর আদায়ে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

করোনার প্রভাব কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি যে চাঙ্গা হচ্ছে, এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে রাজস্ব আদায়ে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে রাজস্ব আয়ে তেজিভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত আছে।

অর্থবছরের প্রথম দুই মাস অর্থাৎ জুলাই ও আগস্টে রেকর্ড ১৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

শুধু আগস্ট মাসেই শুল্ক-কর আদায়ে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত এক দশকে এক মাসের হিসাবে রাজস্ব আদায়ে এত বড় উল্লম্ফন আর দেখা যায়নি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, আমদানি-রপ্তানিতে গতি এসেছে। চাঙ্গা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আহরণে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের সুফল পাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। এ ছাড়া বহির্বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও।

দেশে করোনা সংক্রমণ হওয়ার পর সব কিছু বন্ধ থাকায় গত বছরের এপ্রিল-মে রাজস্ব আদায় হয়নি বললেই চলে। জুন মাসেও তেমন রাজস্ব আদায় হয়নি।

গত বছরের জুলাই মাস থেকে রাজস্ব আদায় স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আর চলতি অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে করোনার আগের সময়ের ধারায় ফিরে আসে এনবিআর।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এনবিআরের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই –আগস্ট দুই মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ৩০ হাজার ১৬০ কোটি টাকা।

অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবার রাজস্ব আদায় বেড়েছে বা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

তবে আদায় পরিস্থিতি ভালো হলেও এ দুই মাসে রাজস্ব আদায় পিছিয়ে আছে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায়। অবশ্য এই সময় কত ঘাটতি হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি এনবিআর। এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। আর আগস্ট মাসে আদায় হয় ১৯ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা।

২০২০ সালের আগস্ট মাসে আদায় হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক উর্ধ্বতন পরিচালক বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ধারায় ফিরছে। রেমিট্যান্স কিছুটা কমলেও রপ্তানি বাড়ছে। সব কিছু মিলিয়ে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরছে। এসব কারণে রাজস্ব আদায় বাড়ছে।’

এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, করোনা সংকট কাটিয়ে অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমদানি যেমন বেড়েছে, তেমনি রপ্তানিও বেড়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে আমাদানি পর্যায়ে শুল্ক আদায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। এই সময়ে আমদানি শুল্ক আহরণে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি প্রায় ১৬ শতাংশ।

এ দুই মাসে আমদানি শুল্ক আদায় হয় প্রায় ১১ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। যেখানে গত বছরে একই সময়ে আদায় হয়েছিল ১০ হাজার ৮ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে ঋণপত্র খোলার হার প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এই ঋণপত্রের বিপরীতে আমদানি পণ্য আসতে শুরু করে। ফলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক আদায়ও বেড়েছে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের বড় উৎস স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আদায় বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। এই সময় মোট ভ্যাট আহরণ হয়েছে ১২ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। গতবার একই সময় আদায় হয় ১১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার পর গত আগস্ট মাসে বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা হয়। যে কারণে ভ্যাট আহরণ বেড়েছে।

অম্ভ্যন্তরীণ আয়ের দ্বিতীয় উৎস আয়কর আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে তুলনামূলক কম। এই সময়ে ভ্রমণসহ আয়কর আদায় বেড়েছে ১০ হাজার ৩ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে আদায় হয় ৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আয়কর আদায় বেড়েছে বা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

এনবিআর বলেছে, অর্থবছরে শুরুতে উন্নয়ন কাজের গতি মন্থর থাকায় আয়কর আদায় কম হয়। চলতি অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যদিও এই লক্ষ্যকে অতি উচ্চাভিলাষী বলেছেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিভাগের আরো খবর