বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য কষ্ট হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
কী কারণে কষ্ট হচ্ছে, সেটিরও ব্যাখ্যা দেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, ফখরুল শিক্ষিত মানুষ হয়েও তারেককে তার নেতা মানতে হয়, এটিই কষ্টের কারণ।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখছিলেন হানিফ। ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ পালনে ‘বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিতে শিক্ষকদের মর্যাদা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ।
হানিফ বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয় মির্জা ফখরুল সাহেবদের জন্য। তিনি শিক্ষিত মানুষ, বিএনপির অনেক শিক্ষিত মানুষ আছেন, যাদের মধ্যে পৈশাচিক মানসিকতা নেই। কিন্তু তারা এমন একটা দল করেন, যেই দলের নেতার পৈশাচিক মানসিকতা আছে। মানুষকে হত্যার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চায়।
‘ফলে ফখরুল সাহেবরা না চাইলেও ওনারা জিম্মি হয়ে গেছেন। তারেক জিয়ার সন্ত্রাসের কাছে তারা জিম্মি। তারেক রহমানের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে তারা সেভাবে কথা বলেন।’
হানিফ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব, আপনি একজন অশিক্ষিত ব্যক্তির নির্দেশনা অনুযায়ী কথা বলেন। এটা জাতির প্রত্যাশা করেন না।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচনে বর্জন করে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের কোনো মায়া হয়নি। কারণ তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো নেই। এ জন্য তাদের এই জঘন্য কাজ করতে তাদের মধ্যে কুণ্ঠাবোধ হয়নি।’
আওয়ামী লীগ সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায় জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘জনগণ যাদের পছন্দ করবে তাদের প্রতি রায় দেবে। এই রায় মানা মানসিকতা পোষণ করে নির্বাচন করুন।’
নির্বাচনালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী যে পদ্ধতি আছে সে পদ্ধতিতে। এই দেশে তত্ত্বাববধায়ক সরকার আসার আর সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সেই পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। কেউ যদি চিন্তা করে মানুষ মেরে, হত্যা করে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে দাবি আদায় করা যাবে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।’
জাতীয় শোকের দিন খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করার সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘ওনার মধ্যে যদি ন্যূনতম বিবেক ও শিক্ষা থাকত, তাহলে ১৫ আগস্ট তার জন্মদিন হলেও তিনি তা পালন করতেন না।’
শিক্ষক রাজনীতির সমালোচনাও করেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘শিক্ষক রাজনীতি শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করে। শিক্ষকদের মধ্যে হানাহানি, রাজনৈতিক দলাদলি কাম্য হতে পারে না।’
শিক্ষকদের শিক্ষক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাহলে তারা সেই সম্মান এবং মর্যাদার আসনে থাকবে। কারণ, তারা মানুষ গড়ার কারিগর।’
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।