মানব সভ্যতার ওপর জলবায়ুর প্রভাব কেমন এবং বিভিন্ন বিষয়ের ‘কমপ্লেক্স সিস্টেম’ বুঝতে অনবদ্য অবদান রাখায় এবার পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিন বিজ্ঞানী।
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে।
পুরস্কারের অর্ধেক অর্থ পাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ৯০ বছর বয়সী সুকুরু মানাবে ও জাপানের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ৮৯ বছর বয়সী ক্লাউস হ্যাসেলমা।
তারা বিশ্ব জলবায়ুর একটি মডেল দাঁড় করিয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতার পরিমাপ করা যায় এবং নির্ভরযোগ্যভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতার পূর্বাভাস দেয়া যায়।
আর পুরস্কারের বাকি অর্ধেক অর্থ পাচ্ছেন ইতালির ৭৩ বছর বয়সী নাগরিক জিওর্জিও পারিসি। তার অবদান, আণবিক অবস্থা থেকে গ্রহ পর্যায়ে ‘ফিজিক্যাল সিস্টেম’ এর বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার বিষয়টি দেখাতে পারা।
মানাবে ও হাসেলমানের বিষয়ে নোবেল প্যানেল বলেছে, ‘তাদের আবিষ্কার বিশ্ব জলবায়ু পরিমাপ এবং এটি মানবতার ওপর কীভাবে প্রভাবে ফেলে সে বিষয়ক আমাদের জ্ঞানের ভিতকে নাড়া দিয়েছে।’
জলবায়ু নিয়ে মানাবের গবেষণাটি ১৯৬০ এর দশকের। তিনি দেখিয়েছিলেন, কীভাবে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তার আবিষ্কারটি বর্তমান জলবায়ু মডেলের ভিত।
এর প্রায় এক দশক পর হাসেলম্যান আরও একটি মডেল দাঁড় করান। তাতে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পারস্পরিক সংযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন। তার এই আবিষ্কার জলবায়ু তত্ত্বগুলোকে আরও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। সেই সঙ্গে মানুষের ওপর যে জলবায়ুর প্রভাব আছে তা দেখাতে সুনির্দিষ্ট কিছু উপায়ও বাতলে দিয়েছেন হাসেলম্যান।
আর পারিসি গঠনগত ও গাণিতিক দিক থেকে জোরদার একটি মডেল গড়ে তোলেন। তার মডেলটি বিভিন্ন ভৌত বিষয়ের ‘কমপ্লেক্স সিস্টেম’ বুঝতে সাহায্য করে, সেই সঙ্গে গণিত, জীববিজ্ঞান, স্নায়ুবিজ্ঞান ও কারিগরি দিক অনুধাবনে সহায়তা করে।
একই বিষয়ে কাজ করে অনন্য অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা বেশ নিয়মিত ঘটনা। বিজয়ীদের দেয়া হয়, একটি করে স্বর্ণের মেডেল এবং এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১১ লাখ ৪০ হাজার ডলার)।
রীতি অনুযায়ী, চিকিৎসা শাস্ত্রে পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবারের নোবেল পর্ব শুরু হয়। কীভাবে মানব শরীর সূর্যের উষ্ণতা ও প্রিয়জনের আলিঙ্গন অনুভব করে, তার ওপর সফল গবেষণা চালিয়ে এ বছর চিকিৎসায় যৌথভাবে নোবেল জিতেছেন ডেভিড জুলিয়াস ও আরডেম পাতাপুতিয়ান।