দেশেই ই-কমার্স খাতে প্রতারণা রোধ ও খাতটিকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও ডিজিটাল ই-কমার্স আইন করার সিদ্ধান্ত হয়। সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ২৭ সেপ্টেম্বর ১৬ সদস্যের একটি আইন প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়।
গঠিত সে কমিটিই এখন খতিয়ে দেখছে, ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে পৃথক কোনো আইন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দরকার আছে কি না?
মঙ্গলবার ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ই-কমার্স আইন প্রণয়ন কমিটির প্রথম বৈঠক।
কমিটির আহ্বায়ক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি অনুবিভাগ) এএইচএম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সফিকুজ্জামান জানান, আইন প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে প্রথম দিন আলোচনায় উঠে এসেছ যে ই-কমার্স খাত নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু পরিচালনার আলাদা আইন ও পৃথক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ আদৌ দরকার আছে কি না?
আলোচনায় আরও উঠে আসে ই-কমার্স খাত নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে ডিজিটাল ই-কমার্স সেল রয়েছে সেটিকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে সেটি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের পরিপূরক হবে কি না?
এ ছাড়া দেশে বিদ্যমান মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ আরও যেসব আইন রয়েছে, সেসব আইনে সংশোধনী এনে তা ই-কমার্স খাতের সঙ্গে সমন্বয় করা যায় কি না?
পরে অংশীজনদের আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে ৯ সদস্য নিয়ে আরেকটি উপকমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এ উপকমিটি সার্বিক দিক বিচার বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন আইনি কমিটির কাছে জমা দেবে।
সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন বিষয়ে পরে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
সম্প্রতি ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকাশপিংসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পণ্য না দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের পর মামলাও হয়েছে। তাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শ শ কোটি টাকার প্রতারণার এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ই-কমার্সের জন্য আলাদা আইন করা যায় কি না সেটি নিয়ে চার মন্ত্রী বৈঠকে বসেছিলেন।
আইন প্রণয়ন কমিটির সদস্যসচিব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ আলী (ডিজিটাল কমার্স সেল) ছাড়াও আইন প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিনিধি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার ও সমবায় বিভাগের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পুলিশ, সাইবার ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স শাখা, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ইক্যাব)-এর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।