কুমিল্লার চান্দিনায় মাদ্রাসাছাত্রীকে গলা কেটে হত্যার তিনদিন পর বাবাকেও একই ভাবে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
৪০ বছর বয়সী সোলাইমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে ছালমা আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও তিনজনসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সোলাইমান। ওই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তারের আগে নিজেই হামলার শিকার হলেন সোলাইমান।
মেয়ে ছালমাকে হত্যার পর বাবা সোলাইমান ব্যাপারি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার ভাইপো শাহ কামাল, শাহ জালাল ও ভাতিজি জামাই ওযায়েরের সঙ্গে জমি বিক্রির পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। ৫ লাখ টাকা দিবে বলে ১০ হাজার টাকা বায়না দিয়েছিল। কিন্তু পরে আমাকে ও আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে ওই ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। জানানো হয় তার কোনো টাকাই দেয়া হবে না। বিষয়টা গ্রাম্য মাতব্বরদের জানালেও তারা মীমাংসা করেনি।
‘তাদের কাছে টাকা চাইলে এক সপ্তাহ আগে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা আমার স্ত্রীকে মারধর করে। আমার স্ত্রী এখনও চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। হামলার ভয়ে শুক্রবার রাতে আমি বাড়ির বাইরে ছিলাম। এই সুযোগে ওরা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি ওদের বিচার চাই।’
নিহতের মা বলেন, ‘আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। রাতে ছালমা বাড়িতে একা ঘুমিয়েছিল। সকালে পাশের ঘরের লোকজন ছালমাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজা শুরু করে। একপর্যায়ে পুকুরে ছালমার গলাকাটা দেহ দেখতে পাওয়া যায়।’
গুরুতর আহত সোলাইমানের ছেলে ইউসুফ বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা ভোরে বাবাকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করার সময় আমরা টের পেয়ে যাই। আমার বোন হত্যার আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তারা শুধু তদন্ত করেই যাচ্ছে। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নাই।’
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার মধ্য রাতে ছালমাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর তিনদিন পর একইভাবে তার বাবাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক বিরোধের জেরে একের পর এক ঘটনাগুলো ঘটছে। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টির তদন্ত করছি। ছালমা হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।’